পাওনা টাকার জন্য শিশুকে হত্যা, চাচা-চাচি গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় পাওনা টাকা ফেরত না দেওয়ায় ইমরান হাসান নামের ১৩ মাস বয়সী এক শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই শিশুর চাচা ও চাচিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

হত্যার শিকার ইমরান হাসান সাতকানিয়ার সুঁইপুরা এলাকার মোহাম্মদ মামুন ও রিমা আক্তার দম্পতির ছোট ছেলে। গ্রেপ্তার দুজনের নাম মারুফা আক্তার (২০) ও নুরুল আবছার ওরফে মানিক (২৫)। তাঁরা উপজেলার চরতী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সুঁইপুরা এলাকার বাসিন্দা। মারুফা ও নুরুল সম্পর্কে ইমরানের চাচি ও চাচা।

পুলিশ ও নিহত শিশুর পরিবার সূত্র জানা গেছে, সুঁইপুরা এলাকার মৃত বাদশা মিয়ার ছোট ছেলে নুরুল আবছার সৌদি আরবে থাকতেন। বিদেশ থাকাকালে তিনি বড় ভাই মোহাম্মদ মামুনের কাছে টাকা পাঠাতেন। সাত মাস আগে মোহাম্মদ মামুন অবৈধভাবে আরব আমিরাতে গিয়ে পুলিশের কাছে ধরা পড়েন। তিন মাস আগে নুরুল আবছার সৌদি থেকে দেশে ফেরেন। দেশে ফিরে বড় ভাইয়ের কাছে পাঠানো টাকাগুলো ভাবি রিমা আক্তারের কাছে দাবি করেন নুরুল ও স্ত্রী মারুফা। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রিমা আক্তার নুরুল ও মারুফাকে কিস্তিতে টাকা দেবেন বলে জানান। গতকাল বুধবার ওই টাকা নিয়ে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এরই সূত্র ধরে বুধবার বিকেলে মারুফা তাঁর ভাশুরের ছোট ছেলে ইমরান হাসানকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন ও স্বামী নুরুলের সহযোগিতায় বাড়ির পাশে গর্ত করে মাটি চাপা দেন।

চরতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার বিকেল থেকে শিশুটি নিখোঁজ ছিল। স্বজনেরা সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেছেন। রাত নয়টার দিকে বাড়ির পাশে নতুন মাটি খননের চিহ্ন দেখে শিশুটির মা, দাদিসহ এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। পরে ওই মাটি সরিয়ে কাপড়ের শপিং ব্যাগে মোড়ানো ও গলায় প্লাস্টিকের রশি প্যাঁচানো অবস্থায় শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।

নিহত ইমরান হাসানের মা রিমা আক্তার বিলাপের সুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তাদের বলেছিলাম ভিটেমাটি বিক্রি করে এক লাখ টাকা ফেরত দেবন। তারা বলেছিল, আমার বড় ক্ষতি করবে। তারা তা–ই করল। এখন কোথায় গেলে আমার ছেলেকে খুঁজে পাব? আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি চাই, তাদের বিচার চাই।’

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিউল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটিকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার দিবাগত রাতেই নুরুল আবছার ও তাঁর স্ত্রী মারুফা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন।