ইজিবাইকে ফেরার পথে শিক্ষিকাকে কোপালেন সাবেক স্বামী

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক স্কুল শিক্ষিকাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছেন তার সাবেক স্বামী। ঘটনাস্থল থেকে সাবেক স্বামীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, স্কুল থেকে ইজিবাইকে করে বাসায় ফেরার পথে সাবেক স্বামী ‘দা’ দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।

আহত শিক্ষিকার নাম ফাতেমা বেগম (৩০)। তিনি হাতিয়ার হরণী ইউনিয়নের টাংকির বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। ঘটনার পর ফাতেমাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফাতেমাকে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল।

আটক সাবেক স্বামীর নাম মো. ওমর ফারুক (৩৫)। তিনি হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের সেন্টার বাজার এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় গাড়িচালক।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী টাংকির বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা পলাশী রানী দাস প্রথম আলোকে বলেন, দুপুর সোয়া দুইটার দিকে বিদ্যালয় ছুটি হয়। ছুটির পর তাঁরা তিন শিক্ষিকা টাংকির বাজার থেকে হাতিয়া বাজারের উদ্দেশ্যে একটি ইজিবাইকে ওঠেন। অন্য দুই শিক্ষিকা হলেন, ফাতেমা বেগম ও জয়স্ত্রী রানী দাস। ইজিবাইকটি বিদ্যালয় থেকে আনুমানিক আধা কিলোমিটার দূরে যাওয়া মাত্র সাবেক স্বামী ওমর ফারুক একটি ধারালো দা নিয়ে ফাতেমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন।

পলাশী রানী দাস বলেন, ফারুক প্রথমে পেছন থেকে ফাতেমাকে কোপ দেন। এতে ফাতেমা চলন্ত ইজিবাইক থেকে পড়ে যান। এরপর ফারুক এলোপাতাড়ি ফাতেমাকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেন। এ সময় তাঁরা দুজন ফাতেমাকে রক্ষার চেষ্টা চালালে তাদেরও লাথি ও কিল-ঘুষি মারেন ফারুক। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় ফাতেমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষিকা ফাতেমা বেগমের গ্রামের বাড়ি হাতিয়ার চরইশ্বর ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকায়। তাঁর সাবেক স্বামী ওমর ফারুক বখাটে প্রকৃতির। এ কারণে বছরখানেক আগে ফাতেমার সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর থেকে ফাতেমা দুই সন্তান নিয়ে হাতিয়া বাজারের পাশে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় শেষে বাসায় ফেরার পথে ফাতেমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ওমর ফারুক। তবে ফাতেমার ওপর হামলার পর পরই এলাকার লোকজন ঘেরাও করে ফারুককে আটক করে পুলিশ দেয়। তিনি বলেন, ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

হাতিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিসান আহমেদ বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ফাতেমার সাবেক স্বামী ফারুককে এলাকার লোকজন আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। আহত ফাতেমার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হবে।