থামতে বললে পারভেজ রবকে বাসচাপা দেন সুপারভাইজার, পাশে ছিলেন চালক

পারভেজ রব। ছবি: সংগৃহীত
পারভেজ রব। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরার তুরাগ থানা এলাকার প্রধান সড়কের বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ভিক্টর ক্ল্যাসিক পরিবহনের একটি বাসকে থামার সংকেত দেন সংগীতশিল্পী পারভেজ রব। কিন্তু বাসটি থামেনি। উল্টো সেটি পারভেজ রবকে চাপা দিয়ে চলে যায়। তখন চালকের আসনে বসে বাসটি চালাচ্ছিলেন সুপারভাইজার আকতার হোসেন। আর তাঁর পাশের আসনে বসে ছিলেন চালক মো. সুমন।

৫ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে তুরাগ থানা এলাকার ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজের সামনের প্রধান সড়কে বাসচাপায় নিহত হন সংগীতশিল্পী পারভেজ রব। এ হত্যার ঘটনায় জড়িত ভিক্টর ক্ল্যাসিক পরিবহনের চালক মোহাম্মদ সুমন (২৮) ও সুপারভাইজার আকতার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার আলাদা দুটি অভিযান চালিয়ে এ দুজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

বাসচালক সুমন এবং সুপারভাইজার আকতার হোসেন কারও চালকের সনদ ছিল না।

নীল শার্ট পরে আছেন চালক সুমন (বামে)। ছবি: ডিবির সৌজন্যে
নীল শার্ট পরে আছেন চালক সুমন (বামে)। ছবি: ডিবির সৌজন্যে



ডিবি উত্তরের উত্তরা জোনাল টিম নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে চালক সুমন এবং শরীয়তপুরের নড়িয়া থেকে বাসের সুপারভাইজার আকতার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে আসে। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন ডিবি পুলিশকে ঘটনার বিস্তারিত জানান।

ডিবি (উত্তর) উপকমিশনার মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সুমন জানিয়েছেন, ঘটনার দিন সকাল ১০টার দিকে তিনি ও আকতার বাসটি নিয়ে বের হন। তখন বাসটি চালাচ্ছিলেন সুপারভাইজার আকতার। আর চালকের পাশের আসনে বসে ছিলেন সুমন। ধউর এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজের সামনে পারভেজ রব তাঁদের বাসকে থামার সংকেত দেন। কিন্তু চালকের আসনে বসে থাকা আকতার বাসটি না থামিয়ে তাঁকে চাপা দিয়ে চলে যান। পরে নিরাপদ জায়গায় বাসটি থামিয়ে তাঁরা দুজন পালিয়ে যান।

মশিউর রহমান বলেন, প্রায় ১৫ দিন পালিয়ে থাকার পর বাসচালক সুমনকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মাসদাইর বাজার এলাকা থেকে এবং সুপারভাইজার আকতার হোসেনকে শরীয়তপুরের নড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবি উত্তরের অতিরিক্ত উপকমিশনার কাজী শফিকুল আলম ও বদরুজ্জামানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে এঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সংগীতশিল্পী পারভেজ রব মারা যাওয়ার দুই দিন পর ভিক্টর ক্ল্যাসিক পরিবহনের আরেকটি বাসের চাপায় তাঁর ছেলে ইয়াসির আলভী মারাত্মক আহত হন। ৭ সেপ্টেম্বরের এ ঘটনায় মারা যান তাঁর বন্ধু মেহেদী। রাজধানীর ট্রমা সেন্টারে প্রায় চার দিন চিকিৎসা করানো হয় আলভীর। পরে বাড়ি ফিরে গেলেও তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। গত সোমবার আলভীকে রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতাল ভর্তি করানো হয়। সেখানে তাঁর কোমরে অস্ত্রোপচার করানো হয়েছে বলে জানান আলভীর মা রুমানা সুলতানা।