মা হলেন নুসরাত হত্যার কারাবন্দী আসামি

সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার এক আসামি মা হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া ১২ টার দিকে ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে তিনি কন্যাসন্তান প্রসব করেন। এর আগে তাঁকে ফেনী জেলা কারাগার থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এই আসামির নাম কামরুন নাহার ওরফে মণি। তিনি নিহত নুসরাতের সহপাঠী ছিলেন। কামরুন নাহারও চলতি বছরে আলিম পরীক্ষা সম্পন্ন করার কথা ছিল। তবে পরীক্ষা চলাকালীন গত ১৬ এপ্রিল তিনি গ্রেপ্তার হন। মামলার এজাহার মতে, যে পাঁচজন নুসরাতের হাত-পা বেঁধে আগুন দিয়েছিলেন তাঁর মধ্যে এই আসামিও রয়েছে।

ফেনী কারাগারের জেলার দিদারুল আলম বলেন, কামরুন নাহারকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কারাগারে আনা নয়। গতকাল দিবাগত রাত ৮টার দিকে প্রসব ব্যথা শুরু হলে কারাগার কর্তৃপক্ষ তাঁকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেয়। সেখানে ১২টা ১০ মিনিটে হাসপাতালের চিকিৎসক ও সেবিকাদের তত্ত্বাবধানে কন্যা সন্তান প্রসব করেন তিনি। দিদারুল আলম আরও বলেন, গত ৪ সেপ্টেম্বর কামরুন নাহারকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য তিন সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে দেওয়া হয়। এই বোর্ডের নেতৃত্বে ছিলেন, হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আবু তাহের পাটোয়ারী। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছে। আবু তাহের পাটোয়ারী বলেন, কামরুন নাহার স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব করেন। মা ও নবজাতক সুস্থ আছেন। আগামীকাল রোববার মা ও নবজাতককে কারাগারে পাঠানো হতে পারে।

গত ১৬ এপ্রিল পুলিশ ব্যুরো আব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কামরুন নাহারকে গ্রেপ্তার করে। এর পরের দিন ১৭ এপ্রিল নুসরাত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ২০ এপ্রিল তিনি ফেনীর বিচারিক হাকিম শরাফত উদ্দিনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মামলার এজাহার মতে, গত ৬ এপ্রিল নুসরাত জাহানকে মাদ্রাসার সাইক্লোন শেল্টারের তৃতীয় তলার ছাদে ডেকে নেওয়ার পর যে পাঁচজন হাত-পা বেঁধে আগুন দেয় তার মধ্যে কামরুন নাহারও আছেন। অন্য চারজন হলেন, শাহাদাত হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, জাবেদ হোসেন ও উম্মে সুলতানা পপি। এ মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ১৬ আসামির মধ্যে ১২ জন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। নুসরাত হত্যার ঘটনায় তাঁরা কোনো না কোনো ভাবে জড়িত বলে জবানবন্দিতে ওঠে আসে।