পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' রোহিঙ্গা দম্পতি নিহত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রোহিঙ্গা ডাকাত দিল মোহাম্মদ (৩২) ও জাহেদা বেগম (২৭) নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁরা পরস্পর স্বামী-স্ত্রী। দিল মোহাম্মদ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে সি ব্লকের ২২ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা মৃত কাদের হোসেনের ছেলে।

পুলিশের ভাষ্যমতে, ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় দুটি অস্ত্র (এলজি), একটি থ্রি কোয়ার্টার এলজি, ৮টি গুলি ও ১২টি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত দিল মোহাম্মদ রোহিঙ্গা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি ডাকাতির মামলা রয়েছে। এ সময় পুলিশের তিন সদস্য উপপরিদর্শক (এসআই) নিজাম উদ্দিন, কনস্টেবল শাহাদত হোসেন ও সুদর্শন বড়ুয়া আহত হন।

গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরসংলগ্ন পাহাড়ে বন্দুকযুদ্ধের এ ঘটনা ঘটে। এ তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার লেদা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে সি ব্লকে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে একটি অস্ত্রসহ দিল মোহাম্মদ ও জাহেদা বেগমকে (স্বামী-স্ত্রী) আটক করে। পরে তাঁদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই শিবিরে তাঁদের সঙ্গে থাকা অস্ত্রধারী শফি উল্লাহ শফিকে আটক ও অস্ত্র উদ্ধার করতে পাশের পাহাড়ের আস্তানায় লুকিয়ে রাখা অস্ত্র উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাঁদের অপরাপর সহযোগীরা আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশের তিনজন সদস্য উপপরিদর্শক (এসআই) নিজাম উদ্দিন, কনস্টেবল শাহাদত হোসেন ও সুদর্শন বড়ুয়া আহত হলে আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টাগুলি ছোড়ে। উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে মাঝখানে পড়ে দিল মোহাম্মদ ও জাহেদা বেগম গুলিবিদ্ধ হন এবং অপরাপর সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ দুজনসহ পাঁচজনকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক গুলিবিদ্ধ দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ রাত সাড়ে ১১টার দিকে পাঁচজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ দিল মোহাম্মদ ও জাহেদা বেগমের অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। তাঁদের শরীরে দুটি করে গুলি লেগেছে। আহত তিন পুলিশ সদস্যের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর আজ রোববার সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

গত বছরের ৪ মে থেকে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হয়। এখন পর্যন্ত র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বন্দুকযুদ্ধ, মাদকে প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন ঘটনায় কক্সবাজার জেলায় ৩ জন নারীসহ ১৬৩ জন নিহত হয়েছেন। নিহত লোকজনের মধ্যে ২ নারীসহ ৪০ জন রোহিঙ্গা।