এনআইডি জালিয়াতি: জিজ্ঞাসাবাদে ইসির পদস্থ কর্মকর্তাদের নাম

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতির পেছনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ঢাকা ও চট্টগ্রামের বেশ কিছু পদস্থ কর্মকর্তার নাম নতুন করে উঠে এসেছে। গতকাল শনিবার আগে গ্রেপ্তার হওয়া অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীনের জবানবন্দিতে এসব নাম আসে। জবানবন্দিতে নাম আসা অন্তত তিনজন পুলিশের নাগালের মধ্যে রয়েছেন বলে সূত্র জানায়।

ডবলমুরিং থানা কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন গতকাল মহানগর হাকিম আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তিন দিনের রিমান্ড শেষে জয়নালকে আদালতে জবানবন্দির জন্য হাজির করা হয়। বেলা তিনটা থেকে আড়াই ঘণ্টা ধরে তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

জবানবন্দিতে কীভাবে রোহিঙ্গাদের ভুয়া এনআইডি তৈরি করা হতো তাও জানিয়েছেন জয়নাল। এতে অনেক পদস্থ কর্মকর্তার নাম আসে বলে আদালত সূত্র জানায়। যাঁরা সার্ভার পরিচালনা করতেন এবং সার্ভারে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এনআইডির প্রাথমিক কাজগুলোতে তাঁর সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কারা ছিলেন, এসব তথ্য জবানবন্দিতে রয়েছে বলে জানা গেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজমের পরিদর্শক রাজেস বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, জয়নাল জবানবন্দি দিয়েছেন। কীভাবে এই জালিয়াতি করতেন তা বলেছেন। নতুন কোনো নাম এসেছে কি না তা তদন্তের স্বার্থে এখন বলা যাচ্ছে না।

>

অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি। তিন কর্মকর্তা পুলিশের নাগালে।

এনআইডি জালিয়াতি করে রোহিঙ্গাদের ভোটার করার অভিযোগে গত সোমবার জয়নাল আবেদীনকে দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অপর দুজন হলেন বিজয় দাস ও তাঁর বোন সীমা দাস ওরফে সুমাইয়া আকতার। এ সময় তাঁর কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এরপর ইসির চট্টগ্রামের অপর এক অস্থায়ী কর্মী মোস্তফা ফারুককে গত বৃহস্পতিবার রাতে দুটি ল্যাপটপসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

 মোস্তফার দুটি এনআইডি

জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের অধীনে অস্থায়ী ভিত্তিতে ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের কাজ করে আসছিলেন মোস্তফা ফারুক। সর্বশেষ চলতি হালনাগাদ কার্যক্রমে তিনি বোয়ালখালী উপজেলায় কাজ করছিলেন।

মোস্তফা ফারুককে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে গত শুক্রবার থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে কাউন্টার টেররিজম। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি তাঁর নিজের এনআইডিও দুটি বলে জানিয়েছেন।

যেভাবে এনআইডি নূর মোহাম্মদের

২০১৬ সালে হালনাগাদ কার্যক্রমের সময় রোহিঙ্গা ডাকাত নূর মোহাম্মদ চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানা থেকে এনআইডি তৈরি করেছিলেন। স্মার্ট কার্ড পেলেও এ–সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র নির্বাচন কার্যালয়ের কাছে নেই। কীভাবে নূর মোহাম্মদ স্মার্ট কার্ড পেলেন তা বোধগম্য নয় অনেকের কাছে।

উখিয়ায় যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যা মামলার প্রধান আসামি নূর মোহাম্মদ ১ সেপ্টেম্বর পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এ সময় তাঁর কাছ থেকে নিজের ছবিসংবলিত নূর আলম নামের একটি স্মার্ট কার্ড পাওয়া যায়।

পাঁচলাইশ থানা নির্বাচন কার্যালয় থেকেই তিনি ভোটার হন ২০১৬ সালে। ঠিকানা ব্যবহার করেন ৪২১১ পাঁচলাইশ বার্মা কলোনির।