ঘুষের টাকাসহ দুদকের ফাঁদে ২ সরকারি কর্মকর্তা

ঘুষের ৩০ হাজার টাকাসহ দিনাজপুর জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর মো. আনোয়ার পাশা ও দিনাজপুর তুলা উন্নয়ন বোর্ডের ক্যাশিয়ার ফেরদৌস হাসানকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বিকেলে দুদকের দিনাজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আহসানুল কবীর পলাশের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি বিশেষ দল তাঁদের গ্রেপ্তার করে।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পেনশনের টাকা দেওয়ার বিনিময়ে ওই দুজন ঘুষ নিচ্ছিলেন।

দুদক জানিয়েছে, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত গো–পালক খলিলুর রহমান চাকরি থেকে অবসরে যান ২০১২ সালে এবং ২০১৬ সালে মারা যান। তাঁর ছেলে ফরহাদ হোসেন দুদকে অভিযোগ করেন, তাঁর বাবা অবসরে যাওয়ার পর তুলা উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের কিছু কর্মকর্তাকে চাহিদামতো ঘুষ না দেওয়ায় তাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল হিসাব করে আনুমানিক ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পেনশন কম দেন। বাবার মৃত্যুর পর জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর মো. আনোয়ার পাশার সঙ্গে গত এক বছর যাবৎ যোগাযোগ করেও পেনশনের ওই টাকা তুলতে পারেননি তিনি।

ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, গত আগস্ট মাসে আনোয়ার পাশা বিষয়টি নিয়ে তুলা উন্নয়ন বোর্ডর ক্যাশিয়ার মো. ফেরদৌস হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে করতে বলেন। ফেরদৌস হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে পেনশনের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পেতে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দিলে টাকা পাওয়া যাবে না বলেও জানিয়ে দেন তিনি। নিরুপায় হয়ে প্রাথমিকভাবে আনোয়ার পাশা ও ফেরদৌসকে ৫ হাজার টাকা করে মোট ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য হন এবং বাকি ৩০ হাজার টাকা দিতে রাজি হলেও বিষয়টি দুদকে জানান। অভিযোগ পেয়ে কমিশন এ বিষয়ে ফাঁদ মামলা পরিচালনার অনুমোদন দেয়।

আজ দুদকের সাত সদস্যের একটি বিশেষ দল দিনাজপুর জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের চারদিকে সকাল থেকে ওত পেতে থাকে। বেলা সাড়ে তিনটার সময় অডিটর মো. আনোয়ার পাশা ও তুলা উন্নয়ন বোর্ডের ক্যাশিয়ার ফেরদৌস যখন জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে বসে ঘুষের ৩০ হাজার টাকা নিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই দুদকের দলটি তাদের হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। এ বিষয়ে দিনাজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে একটি মামলা করা হয়েছে।