'বউভাত' নয়, হলো 'বরভাত'

বর তরিকুল ইসলাম ও বউ খাদিজা আকতার। ছবি: শাহ আলম
বর তরিকুল ইসলাম ও বউ খাদিজা আকতার। ছবি: শাহ আলম

খাদিজা ও তরিকুল যেন পণ করেছেন বিয়েসংক্রান্ত নিয়মগুলোকে বুড়ো আঙুল দেখাবেন। এর আগে গতকাল শনিবার প্রচলিত নিয়ম ভেঙে কনে খাদিজা বর তরিকুলকে বিয়ে করে বাড়ি ফেরেন। আজ রোববার খাদিজার বাড়িতে আয়োজন করা হয়েছে ‘বরভাত’।

বিয়ের পরে বরের বাড়িতে আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে যে আয়োজন, সেটাকে বলে ‘বউভাত’। তবে যেহেতু এবার বউয়ের বাড়িতে এই আয়োজন, তাই এক বলে হচ্ছে ‘বরভাত’।

‘বরভাতের’ এ অনুষ্ঠান হয়েছে খাদিজা আক্তারের বাড়ি—চুয়াডাঙ্গা সদরের হাজরাহাটি গ্রামে।

‘বরভাত’ অনুষ্ঠানের বিষয়ে বর তরিকুল বলেন, বিয়ের ঘটনা সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। ‘বরভাতের’ অনুষ্ঠানেও অনেক মানুষ যোগ দিয়েছেন। তাঁরা এই ধরনের বিয়েকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন।

খাদিজার বাবা কামরুজ্জামান বলেন, ‘মেয়ের বিয়ের ঘটনা এখন সবার মুখে মুখে। এই কারণে সকাল থেকেই এলাকার মানুষ ভিড় করেছে বরকে এক নজর দেখার জন্য। মেয়ের বিয়েতে সবকিছুই উল্টো করা হচ্ছে। অনেকে এতে বেশ মজা পেলেও বেশ কিছু মানুষ সমালোচনাও করছে।

বিয়ের পরে বরের বাড়িতে যে আয়োজন, সেটাকে বলে ‘বউভাত’। সেটারই আদলে বউয়ের বাড়িতে আয়োজন করা হয়েছে ‘বরভাত’। ছবি: শাহ আলম
বিয়ের পরে বরের বাড়িতে যে আয়োজন, সেটাকে বলে ‘বউভাত’। সেটারই আদলে বউয়ের বাড়িতে আয়োজন করা হয়েছে ‘বরভাত’। ছবি: শাহ আলম

নববধূ খাদিজা আক্তার বলেন, ভিন্ন ধরনের বিয়েতে আরও একটি নতুন মাত্রা যোগ করতে এই ‘বরভাতের’ আয়োজন। ‘বরভাতের’ অনুষ্ঠানে অনেকে এসে তাঁদের দোয়া করছেন।

তরিকুলের বাবা আবদুল মাবুদ বলেন, অনেক সমালোচনা সহ্য করে ওই রকম একটি বিয়ে দিতে হয়েছে। বিয়েতে সব চেয়ে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন খাদিজা। ‘বরভাতের’ অনুষ্ঠানও খাদিজা-তরিকুলের ইচ্ছাতে হয়েছে। নারী-পুরুষ সমতা তৈরিতে খাদিজা-তরিকুলের বিয়ে সমাজে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।

জেলা প্রশাসক আতাউল গনি বিয়ের ঘটনাটি ফেসবুক ও গণমাধ্যমে দেখেছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, খাদিজা-তরিকুলের বিয়েটি নারী মর্যাদার লড়াইয়ে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। আগামী দিনে অনেকে তাদের মতো বিয়ে করতে চাইবে। সমাজে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা পাবে।