সেতুর ওপর সাঁকো বানিয়ে পারাপার

লোহার সেতু ভেঙে যাওয়ার পর এক বছর ধরে সাঁকো তৈরি করে মানুষ পারাপার হচ্ছে। সম্প্রতি পিরোজপুর সদরের বাদুরা গ্রামে।  ছবি: প্রথম আলো
লোহার সেতু ভেঙে যাওয়ার পর এক বছর ধরে সাঁকো তৈরি করে মানুষ পারাপার হচ্ছে। সম্প্রতি পিরোজপুর সদরের বাদুরা গ্রামে। ছবি: প্রথম আলো

পিরোজপুর সদর উপজেলার বাদুরা গ্রামের উমেদপুর খালের ওপর লোহার সেতু ভেঙে পড়ে আছে প্রায় এক বছর ধরে। সেখানে সাঁকো তৈরি করে মানুষ পারাপার হচ্ছে। সেতু না থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে চার গ্রামের অন্তত ১৫ হাজার মানুষ। বাঁশের সাঁকো পার হতে শিশু ও বৃদ্ধদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিন দশক আগে বাদুরা গ্রামের দারুল উমুল খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসাসংলগ্ন উমেদপুর খালের ওপর ৪০ মিটার দীর্ঘ লোহার সেতু নির্মাণ করা হয়। কয়েক বছর আগে সেতুটির একাংশ ভেঙে গেলে তা মেরামত করা হয়। বিভিন্ন সময় খালে চলাচল করা বালুবাহী কার্গোর ধাক্কায় সেতুটির ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক বছর আগে সেতুটির ৩০ মিটার ভেঙে পড়ে। তখন থেকে স্থানীয় লোকজন ভাঙা সেতুর স্থানে বাঁশ ও সুপারিগাছ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে পারাপার হচ্ছে।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, সেতুর পূর্ব দিকে বাদুরা, গাজীপুর, হরিণা গাজীপুর ও বাইনখালী গ্রাম। এসব গ্রামের মানুষ সেতুটি পার হয়ে জেলা সদর, হাসপাতাল, ইউনিয়ন পরিষদ ও হাট বাজারে যাতায়াত করে। সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাঙা সেতুর জায়গায় সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। এর ওপর দিয়ে লোকজন চলাচল করছে।

বাদুরা গ্রামের ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন গাজী বলেন, স্থানীয় গ্রামগুলোর মানুষ সেতুটি দিয়ে যাতায়াত ও যানবাহনে পণ্য পরিবহন করত। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় গ্রাম থেকে শহরে ধান, চাল ও কৃষিপণ্য যানবাহনে পরিবহন করা যাচ্ছে না। চার গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। অসুস্থ ব্যক্তি ও রোগীদের সাঁকো পার হয়ে হাসপাতালে যেতে কষ্ট হয়।

পিরোজপুর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাদুরা গ্রামের বাসিন্দা জিয়াউল আহসান বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এরপর ২০১৬ সালে সেতুটির একাংশ ভেঙে গেলে মেরামত করা হয়। পরে আরও একবার সেতুটি ভেঙে গেলে আবার মেরামত করা হয়। ২০১৮ সালে সেতুটির বড় অংশই ভেঙে যায়। এখানে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য তদবির করে যাচ্ছি।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সদর উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, ভেঙে যাওয়া সেতুটির জায়গায় গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন নকশা করা হচ্ছে। নকশা করার পর তা অনুমোদন পেলে পাকা সেতু নির্মাণ করা হবে। লোহার সেতুর স্থলে নতুন পাকা সেতু নির্মাণের জন্য এলজিইডি ‘দক্ষিণাঞ্চলের লোহার সেতু পুনর্নির্মাণ ও পুনর্বাসন প্রকল্প’ হাতে নিয়েছে। ওই প্রকল্পের মাধ্যমে সেতুটি নির্মাণ করা হবে।