পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে পানিতে ঝাঁপ, যুবলীগ নেতার মৃত্যু

যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা যুবলীগের নেতা আনোয়ার হোসেনকে (৩৫) গত শনিবার আটক করে হাতকড়া পরানোর সময় তিনি পুলিশের কাছ থেকে ছুটে পাশের খালে ঝাঁপ দেন। পরের দিন গতকাল রোববার খালে তাঁর লাশ ভেসে ওঠে। এ ঘটনায় পুলিশ সাবাহ উদ্দিন নামের একজনকে আটক করেছে।

আনোয়ার হোসেনের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ প্রথমে ঘটনাটি স্বীকার করেনি। সাহাব উদ্দিন ঘটনার সময় আনোয়ারের সঙ্গে থাকলেও তিনি সঙ্গে সঙ্গে কাউকে কিছু জানাননি। পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে খালে ঝাঁপ দেওয়ার বিষয়টি পরিবার বা আশপাশের লোকজনকে জানালে আনোয়ারকে হয়তো জীবিত উদ্ধার করা যেত।

তবে পুলিশ বলছে, যে স্থানে আনোয়ার ঝাঁপ দিয়েছিলেন, সেটা হাওরের মতো। পুলিশ কিছু সময় তাঁকে খুঁজেছে। কিন্তু না পেয়ে মনে করেছে, তিনি হয়তো সাঁতরে অন্য দিকে চলে গেছেন। এ কারণে খবরটি তাঁর পরিবারকে তাৎক্ষণিক জানানো হয়নি।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ার হোসেন ছাতক উপজেলার চরমহল্লা ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলা যুবলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য। গত শনিবার রাতে উপজেলার জাউয়াবাজার থেকে তাঁর বন্ধু সাহাব উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। কাচুর সেতু এলাকায় পৌঁছানোর পর রাত আটটার দিকে সাদা পোশাকে দুই ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ পরিচয় আনোয়ারকে আটক করেন। আনোয়ারের হাতে হাতকড়া পরানোর সময় তিনি পুলিশের কাছ থেকে ছুটে পাশের খালে ঝাঁপ দেন। কিছু সময় পর পুলিশ পরিচয় দেওয়া দুজন ও সাহাব উদ্দিন সেখান থেকে চলে যান।

আটক সাহাব উদ্দিনের বরাত দিয়ে আনোয়ার হোসেনের চাচা সমরু মিয়া আজ সোমবার বলেন, শনিবার রাত আটটার দিকে ঘটনা ঘটলেও সাহাব উদ্দিন রাত তিনটার দিকে পরিবারের লোকজনকে এ কথা জানান। এরপর তাঁরা রাতেই সেখানে গিয়ে আনোয়ারকে খুঁজতে থাকেন। পরের দিন সিলেট থেকে ডুবুরি দল এসে তাঁর সন্ধানে অভিযান চালায়। পরে সন্ধ্যার দিকে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। এ সময় পুলিশের সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। লাশ উদ্ধারের পরই পুলিশ সাহাব উদ্দিনকে আটক করে। তিনি এই মৃত্যুর জন্য যাদের গাফিলতি আছে, তাদের বিচার দাবি করেন তিনি।

ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, আনোয়ার হোসেন একটি গাড়ি চুরির মামলায় দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। আজ আনোয়ারের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা করেছে। তবে এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।