স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গাড়ি মেরামতের ভুয়া বিল

রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইপিআই ইউনিটে গাড়ি মেরামতের ভুয়া ভাউচার দিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালানোর সময় এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলছেন দুদক কর্মকর্তারা। ছবি: দুদকের সৌজন্যে
রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইপিআই ইউনিটে গাড়ি মেরামতের ভুয়া ভাউচার দিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালানোর সময় এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলছেন দুদক কর্মকর্তারা। ছবি: দুদকের সৌজন্যে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইপিআই প্রকল্পে নিয়মিতভাবে ভুয়া ভাউচারে সরকারের অর্থ আত্মসাৎ করছেন গাড়ির চালকেরা। মেরামত ছাড়াই প্রতিটি গাড়িতে ৩ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার ৮০০ টাকা বিল নেওয়া হচ্ছে। যাচাই ছাড়াই দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ওই সব বিল পাস করে দিচ্ছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের এক অভিযানে এই দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইপিআই ইউনিটে গাড়ি মেরামতের ভুয়া ভাউচার দিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে আজ সোমবার অভিযান চালানো হয়। প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নুরজাহান পারভীনের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়।

দুদক জানিয়েছে, অভিযান চালানোর সময় তারা প্রকল্পের চারটি গাড়ির তথ্য সংগ্রহ করে। তাতে দেখা যায়, প্রতিটি গাড়িতে মেরামত বাবদ নিয়মিতভাবে বিল করে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে ভাউচারে উল্লিখিত একটি ওয়ার্কশপে ফোন করে জানা যায়, ওই দোকানে কোনো গাড়িই মেরামত করা হয়নি। সার্বিক বিবেচনায় দুদকের দলটির কাছে প্রতীয়মান হয়েছে, ভুয়া ভাউচার তৈরি করে সরকারের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। আর কর্মকর্তারা কোনো ধরনের যাচাই–বাছাই ছাড়াই বিল পাস করেছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানের জন্য কমিশনে সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেবে দুদকের অভিযান পরিচালনাকারী দলটি।

রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের অভিযোগে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে অভিযান চালিয়েছে সংস্থার নোয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়। সহকারী পরিচালক সুবেল আহমেদের নেতৃত্বে দুটি অভিযান চালানো হয়। দুদকের হটলাইনে অভিযোগ আসে, সোনাইমুড়ী উপজেলায় সোনাইমুড়ী জিসি, জমিদারহাট জিসি ভায়া কাশিপুর পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। সরেজমিনে পরিদর্শনে দুদক দল দেখতে পায়, রাস্তার দুই পাশে পর্যাপ্ত মাটি না দেওয়ার কারণে রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। কালভার্ট নির্মাণের কাজ শেষ না করে ফেলে রাখা হয়েছে এবং এর ওপরে কোনো পাটাতন না দেওয়ায় জনগণের যাতায়াতের দুর্ভোগ হচ্ছে।

সোনাইমুড়ীর চাষীরহাট ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভূঁইয়া বাজার হুনাফা খাতুন উচ্চবিদ্যালয় থেকে শাহারপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে একই দল অভিযান চালায়। অভিযানে দেখা যায়, রাস্তার দুই পাশে দেড় ফুট করে মাটি দেওয়ার কথা থাকলেও মাটি না দিয়ে কাজ শেষ হয়েছে।
দুদকের দলটি দুটি সড়ক নির্মাণসংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করে। অনিয়মের বিষয়ে অনুসন্ধানের সুপারিশ করে কমিশনে প্রতিবেদন পাঠাবে দলটি।

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় রাস্তা মেরামতে ব্লক প্রতিস্থাপনে অনিয়মের অভিযোগে সেখানে অভিযান চালিয়েছে দুদক। দুদকে অভিযোগ আসে, নাগরপুর উপজেলার ভদ্রা থেকে ধুনাইল পর্যন্ত রাস্তায় সঠিকভাবে ব্লক প্রতিস্থাপনের কাজ না করায় এক মাসের মধ্যে রাস্তা ভেঙে গেছে। অভিযোগ পেয়ে টাঙ্গাইল সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তা মেরামতে অত্যন্ত নিম্নমানের ব্লক ব্যবহৃত হয়েছে। দলটি মেরামতসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে। তথ্য বিশ্লেষণ করে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে অভিযানকারী দল।

এ ছাড়া পাবনা পাসপোর্ট অফিসে ভুল সংশোধন, ফরম জমা, ফিঙ্গারপ্রিন্ট গ্রহণে অবৈধ অর্থ আদায় ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে এবং পাবনা পৌরসভা কর্তৃক রাস্তা সংস্কার ও ড্রেন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয় দুটি অভিযান চালায়।