ঝুপড়িতে গেলেন সাংসদ বাড়ি দেওয়ার আশ্বাস

শাহরাস্তির মনোহর আলীর ঝুপড়িতে সাংসদ রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। গত রোববার।  প্রথম আলো
শাহরাস্তির মনোহর আলীর ঝুপড়িতে সাংসদ রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। গত রোববার। প্রথম আলো

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার শোরসাক গ্রামের মনোহর আলী একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। ভিক্ষাবৃত্তি করে চলে তাঁর সংসার। তিন মেয়েকে নিয়ে থাকেন একটি ঝুপড়িতে। অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কেটে যায়। তাঁর এই দুঃখ-দুর্দশার জীবনচিত্র তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কয়েক দিন ধরে চলে লেখালেখি। 

বিষয়টি সাংসদ ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের নজরে আসে। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আকতারকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মনোহরের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে বলেন। ইউএনও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মনোহর সত্যি মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সাংসদকে বিষয়টি অবহিত করেন ইউএনও। পরে সাংসদের নির্দেশে ইউএনও ৫ হাজার টাকা, চাল–ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনে দেন মনোহরকে। 

গত রোববার সকালে সাংসদ রফিকুল ইসলাম শোরসাক গ্রামে মনোহরের সেই ঝুপড়িতে যান। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ইউএনও শিরিন আকতার, পৌর মেয়র আবদুল লতিফ মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান, ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মজুমদার প্রমুখ। 

সাংসদকে জড়িয়ে ধরে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মনোহর কেঁদে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘অনেক বছর ধরে খুবই কষ্টে আছি। কেউ কখনো খোঁজখবর নেননি। ঝড়বৃষ্টি শুরু হলে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ভয়ে ঘরে আতঙ্কিত হয়ে থাকতাম। আপনি (স্থানীয় সাংসদ) আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।’ 

মনোহরকে আশ্বাস দেন সাংসদ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আপনার জন্য ৩ শতাংশ জায়গা কিনে একটি বাড়ি করে দেওয়া হবে। আপনার দুই মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। যেই পর্যন্ত আপনার বাড়ি না হবে, সেই পর্যন্ত আপনাকে বাসা ভাড়া করে দেওয়া হবে। সেই বাসায় আপনারা থাকবেন।’ মনোহরের হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন সাংসদ। তিনি মনোহরদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটান। 

স্থানীয় সাংবাদিকদের উদ্দেশে সাংসদ বলেন, ‘দেশের আনাচে–কানাচে অনেক মনোহর আলী পড়ে আছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশের মানুষের দুঃখ লাঘবের জন্য কাজ করছেন। সেখানে একজন মনোহর আলী স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে এভাবে দুঃখ–কষ্টে থাকবেন, তা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা তাঁকে জায়গা কিনে প্রধানমন্ত্রীর উপহারস্বরূপ একটি ঘর প্রদান করব।’ 

একই দিন দুপুরে হাজীগঞ্জ উপজেলায় ‘যার জমি আছে, ঘর নেই’ প্রকল্পে ২৪০ জন গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ঘরের চাবি তুলে দেন সাংসদ।