পদ্মায় অর্থায়ন না করে ভুল স্বীকার বিশ্বব্যাংকের

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক বিশেষ দূত জ্যাঁ টডের নেতৃত্বে আট সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সচিবালয়, ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর। ছবি: বাসস
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক বিশেষ দূত জ্যাঁ টডের নেতৃত্বে আট সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সচিবালয়, ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর। ছবি: বাসস

জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংক যৌথভাবে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ এবং সড়ক নিরাপত্তায় কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। শিগগিরই এ লক্ষ্যে প্রকল্প প্রণয়নসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন না করে ভুল করেছে, সেটা বিশ্বব্যাংক স্বীকার করেছে।

আজ মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

এর আগে মন্ত্রণালয়ের অফিসকক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিবের সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক বিশেষ দূত জ্যাঁ টডের নেতৃত্বে আট সদস্যের এক প্রতিনিধিদল মন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টভিগ শ্যাফার উপস্থিত ছিলেন।

ঝিনাইদহ থেকে ভোমরা ও ঝিনাইদহ থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত ২৬০ কিলোমিটার নতুন করে চার লেন সড়ক নির্মাণ করা হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঝিনাইদহ থেকে ভোমরা পর্যন্ত ১৬০ কিলোমিটার চার লেন সড়ক নির্মাণে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে। আর এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইডিবি) ঝিনাইদহ থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে অর্থায়ন করবে। তারা রোড সেফটিকে প্রাধান্য দিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নিয়ে এসেছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, সড়কে নিরাপত্তা বিধান এবং পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা জোরদারকরণে গঠিত কমিটির ১১১ দফা সুপারিশ নিয়ে কাজ করছে বিশ্বব্যাংকের সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক সেল।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংক আগামী তিন বছরের মধ্যে সড়ক নিরাপত্তায় দেশের জনগণকে দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখাতে চায়।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল নিরাপদ সড়ক বিষয়ে কথা বলতে এসেছে। বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে হঠাৎ করে সরে গেলে তাদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তারপর বিশ্বব্যাংক নতুন করে আবার যাতায়াত শুরু করতে চায়। তারা বিনিয়োগ করতে চায়, প্রথমে তারা নিরাপদ সড়ক নিয়ে কাজ শুরু করতে চায়। এদের সঙ্গে জাতিসংঘও রয়েছে। তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে যা অর্থায়ন করা দরকার, তা বিশ্বব্যাংক করবে। জাতিসংঘও তাদের সঙ্গে অর্থায়ন করবে। তিন বছরের পরিকল্পনায় বাংলাদেশের রোড সেফটির বিষয়টিতে একটি দৃশ্যমান পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারবেন বলে মনে করছেন বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাদের ফান্ডিং ভিন্ন, কিন্তু কাজ করবে একসঙ্গে। সড়কে যে বিশৃঙ্খলা আছে, কখনো কখনো নাজুক অবস্থা সেখানে তারা দৃশ্যমান পরিবর্তন আনতে চায়, সে লক্ষ্যে তারা কাজ করবে।

পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন না করে ভুল করেছে, সেটা বিশ্বব্যাংক স্বীকার করেছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক রাখতে চাই না। আগে যা হওয়ার হয়ে গেছে। আমরা তাদের নতুন প্রস্তাবে সাড়া দিচ্ছি। তারা বলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে তারা নতুন করে কাজ করবে।’

এর আগে মন্ত্রীর সঙ্গে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি মিজ ক্যাটি ক্রোয়েকের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে।