বেসমেন্টে অবৈধ দোকান, ৩ মার্কেটে দুদকের অভিযান

রাজধানীর মিরপুরে কয়েকটি শপিং কমপ্লেক্সের বেসমেন্টে রাজউকের অনুমোদন ছাড়া দোকান নির্মাণ করে পজিশন বিক্রির অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়েছে দুদক। ছবি: দুদকের সৌজন্যে
রাজধানীর মিরপুরে কয়েকটি শপিং কমপ্লেক্সের বেসমেন্টে রাজউকের অনুমোদন ছাড়া দোকান নির্মাণ করে পজিশন বিক্রির অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়েছে দুদক। ছবি: দুদকের সৌজন্যে

রাজধানীর মিরপুরে কয়েকটি শপিং কমপ্লেক্সের বেসমেন্টে (কার পার্কিংয়ে) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদন ছাড়া দোকান নির্মাণ করে পজিশন বিক্রির অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে রাজউককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে ওই অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুদকের হটলাইন ১০৬–এ অভিযোগ পেয়ে প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম ও উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের সমন্বয়ে একটি দল মিরপুরের তিনটি মার্কেটে অভিযান চালায়। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন রাজউক জোন-৩–এর অথরাইজড অফিসার মুকিদ ইহসান ও রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

অভিযানে দেখা যায়, মিরপুর-১ নম্বরের শাহ আলী শপিং কমপ্লেক্স, মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্স ও বাগদাদ শপিং কমপ্লেক্সের বেসমেন্টে রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই দোকান নির্মাণ করে পজিশন বিক্রি করা হয়েছে। যানবাহন পার্কিংয়ের নির্ধারিত জায়গায় দোকানপাট নির্মাণ করায় মার্কেটে আসা ক্রেতারা রাস্তার ওপর তাঁদের যানবাহন পার্কিং করে রাখছেন। এ কারণে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

দুদক বলছে, রাজউকের নিয়মিত তদারকি বা তৎপরতা না থাকার কারণে এ তিনটি মার্কেটসহ অন্যান্য মার্কেটের কার পার্কিং এলাকায় অবৈধ দোকান নির্মাণ করে তা বিক্রি ও ভাড়া দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া রাজউকের অনুমোদিত নকশার অতিরিক্ত অংশজুড়ে অনেক মার্কেট নির্মিত হয়েছে। এসব নকশাবহির্ভূত অংশ এবং কার পার্কিং এলাকা থেকে দোকান উচ্ছেদ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দুদক দলের পক্ষ থেকে রাজউকের অথরাইজড অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

লালমনিরহাটের আদিতমারীতে ভুয়া জন্মতারিখ ব্যবহারের মাধ্যমে চাকরিতে ঢুকে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালায় দুদক। হটলাইনে অভিযোগ আসে, একজন মুক্তিযোদ্ধা আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজে ১৯৭৪ সালে জন্মতারিখ দেখিয়ে চাকরি করছেন। সরেজমিনে অভিযানে দুদক দলটি অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়। দলটি জানতে পারে, ওই ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিয়মিত ভাতা পেয়ে আসছেন, কিন্তু দলটি যে নথিপত্র পেয়েছে, তাতে তাঁর জন্মতারিখ ১৯৭৪ সালের ৫ মার্চ দেখা যায়। এ বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানের অনুমতি চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে দুদকের ওই দল।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে অভিযান চালিয়েছে দুদক। দুদকের হবিগঞ্জ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি দল অভিযান চালিয়ে উপজেলার হাটখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ যথাযথভাবে হচ্ছে না মর্মে প্রমাণ পায়। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললে তাঁরাও নির্মাণকাজের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। দুদক দলের কাছে ওই প্রকল্পের মাত্র ২০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে প্রতীয়মান হলেও বরাদ্দ বাজেটের (প্রায় ৭৪ লাখ) সিংহভাগ টাকা পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। সার্বিক বিবেচনায় ওই কাজের তদারকিতে এলজিইডির প্রকৌশলীর দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে বলে মনে করছে দুদক দল। কাজের গুণগত মান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই বিল পরিশোধের জন্য প্রকৌশলীকে পরামর্শ দেয় দুদকের দলটি। এ নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য যাচাইয়ের জন্য অনুসন্ধানের অনুমোদন চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে অভিযান পরিচালনাকারী দল।

এ ছাড়া বরগুনা সড়ক বিভাগের রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের অভিযোগে এবং ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স মেরামতের জন্য বরাদ্দ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে যথাক্রমে পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয় এবং সিলেট সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে দুটি আলাদা অভিযান চালানো হয়।