ছেলেকে বাঁচাতে ভুয়া জন্মসনদ, যেখানে বাবার বিয়ের আগেই ছেলের জন্ম

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ছেলে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ করেছে। মেয়ের বাবা অপহরণের মামলা করায় ছেলের সঙ্গে অপহৃত মেয়ের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন বাবা মনির মোল্লা। কিন্তু বাধ সাধে দুজনের বয়স। ছেলে কিংবা মেয়ে কেউই প্রাপ্তবয়স্ক নয়। বাল্যবিবাহ এড়াতে তাই ছেলের ভুয়া জন্মসনদ বানালেন বাবা। সেই জন্মসনদ অনুযায়ী, বাবার বিয়ের সাড়ে তিন বছর আগেই জন্ম হয়েছে ছেলের!

ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের গৌরনদী উপজেলায়। অভিযুক্ত মনির মোল্লা ওই উপজেলার বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, মেয়ের বাবার করা অপহরণ মামলা থেকে বাঁচতে দুজনের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মনির। কিন্তু ছেলে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ছেলের ভুয়া জন্মসনদ তোলেন। ভুয়া ওই জন্মসনদে ছেলের জন্মতারিখ দেখানো হয় ১২ ডিসেম্বর, ১৯৯৭। কিন্তু মনির মোল্লার বিবাহের রেজিস্ট্রার অনুযায়ী, তাঁর বিয়ের তারিখ ২০০০ সালের ১৯ জুলাই। সেই হিসেবে বাবার বিয়ের সাড়ে তিন বছর আগেই জন্ম হয়েছে ছেলের।

অপহৃত মেয়ের বাবা অভিযোগ করে বলেন, অপহরণ করার আগে তাঁর মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতেন মনির মোল্লার ছেলে। অনেকবার নালিশ জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। মেয়েকে অপহরণ করা হলে তিনি গৌরনদী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলা থেকে বাঁচতে ছেলের ভুয়া জন্মসনদ বানিয়ে বিয়ের কাগজপত্র তৈরির চেষ্টা করছেন মনির। মনিরের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনে মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।

অভিযুক্ত মনির মোল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘর তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মামলার আসামি হওয়ার কারণে পরিবারের সবাইকে নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন মনির।

ভুয়া জন্মসনদের ব্যাপারে জানতে চাইলে বাটাজোর ইউপির চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মনির মোল্লা পশ্চিম শাহজিরা গ্রামের বাসিন্দা। গ্রামটি আমার ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত নয়। এই নামে কোনো জন্মসনদ ইস্যু করা হয়নি।’