প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে শ্লীলতাহানির শিকার রাবির ছাত্রী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষকের সন্তানদের প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে শহরের কাজলা এলাকায় সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক বীথিকা বণিকের বাসায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের ভাইকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম শ্যামল বণিক (৪৪)। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার বাসিন্দা হলেও তিনি বোন বীথিকা বণিকের বাসাতেই থাকতেন। বীথিকা বণিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের প্রাধ্যক্ষ। শ্লীলতাহানির শিকার ছাত্রীর বাবা ৯৯৯-এ ফোন করলে মতিহার থানার পুলিশ বুধবার সকালে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ওই ছাত্রী বীথিকা বণিকের বাসায় গিয়ে তাঁর সন্তানদের প্রাইভেট পড়াতেন। গতকাল মঙ্গলবারও তিনি প্রাইভেট পড়াতে যান। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পড়ানো শেষ হয়। বৃষ্টি থাকায় বীথিকা বণিক ওই ছাত্রীকে রাতে তাঁর বাসায় থেকে যেতে বললে ছাত্রী রাজি হন। রাত দেড়টার দিকে বীথিকা বণিক হঠাৎ করেই বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলে যান। রাত আড়াইটার দিকে শ্যামল বণিক ওই ছাত্রীর কক্ষে ঢুকে তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। এ সময় ছাত্রী জোরে চিৎকার দিলে শ্যামল দ্রুত কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। সকালের দিকে ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. লুৎফর রহমান এবং তাঁর বাবাকে ফোন করেন। পরে ছাত্রীর বাবা ৯৯৯–এ ফোন করলে মতিহার থানার পুলিশ গিয়ে ছাত্রীকে উদ্ধার করে। শ্যামল বণিককেও সেখান থেকে আটক করা হয়। পরে ওই ছাত্রীর মেডিকেল পরীক্ষার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে শহরের শাহ মখদুম থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ দুপুরে ওই ছাত্রী মতিহার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০৩ (সংশোধিত)–এর ১০ ধারায় মামলা করেন। এই মামলায় শ্যামল বণিককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।’

গ্রেপ্তার শ্যামল বণিকের বোন অধ্যাপক বীথিকা বণিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘মঙ্গলবার আমার স্বামীর মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। ওই ছাত্রী আমার বাসায় আসার আগে আরেক মেয়ে আমার সন্তানদের পড়াতে এসেছিল। সে-ই ওই ছাত্রীকে আমার বাসায় থেকে যেতে বলে। আমি নিজে থেকে তাকে থাকতে বলিনি, তবে আপত্তিও করিনি। রাত দেড়টার দিকে হলে একটি সমস্যার কথা জানতে পারি। তাই ওই সময় হলে গিয়েছিলাম।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই ছাত্রী আমাকে ফোন করেনি। পুলিশ আসার পর ঘটনা জানতে পারি।’