ক্যাসিনোর টাকা যুবলীগের সাঈদের কাছে পাঠাতেন লোকমান

লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। ছবি: বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া
লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। ছবি: বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ক্যাসিনোর টাকা পাঠাতেন আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সভাপতি এ কে এম মমিনুল হক ওরফে সাঈদের কাছে। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‍্যাবের কাছে এ কথা জানান লোকমান।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে লোকমানকে তাঁর মণিপুরী পাড়ার বাসা থেকে আটক করে র‍্যাব-২। আটকের পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‍্যাব-২-এর কার্যালয়ে নেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে র‍্যাব-২-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ প্রথম আলোকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

লোকমান হোসেন ভূঁইয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালকও। অন্যদিকে, সাঈদ বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। তিনি যুবলীগ নেতা। আবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কাউন্সিলর। তিনিও ক্যাসিনো-বাণিজ্যে জড়িত। তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির অভিযোগ আছে।

র‍্যাব-২-এর অধিনায়ক বলেন, গতকাল রাতে লোকমানের মণিপুরী পাড়ার বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে পাঁচ বোতল বিদেশি মদ পাওয়া যায়। অনুমোদন ছাড়াই এই মদ অবৈধভাবে বাসায় রেখেছিলেন তিনি। তা ছাড়া তাঁর মদপানের অনুমোদনও নেই। এ কারণে তাঁকে আটক করা হয়েছে।

এ কে এম মমিনুল হক ওরফে সাঈদ। ছবি: সংগৃহীত
এ কে এম মমিনুল হক ওরফে সাঈদ। ছবি: সংগৃহীত

র‍্যাব-২-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লোকমান জানান, ক্লাবের ক্যাসিনোর টাকা তিনি আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সভাপতি ও বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক ওরফে সাঈদের কাছে পাঠাতেন। সাঈদের মাধ্যমে টাকা কোথায় রাখতেন, দেশে নাকি বিদেশে পাঠাতেন, সে বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে লোকমানকে থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান র‍্যাব-২-এর অধিনায়ক। তিনি বলেন, লোকমানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হবে।

গতকাল রাত ১১টার পর লোকমানের বাসায় প্রবেশ করে র‍্যাব-২। তারা তাঁর বাসায় অভিযান চালায়। দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে লোকমানকে আটক করে নিয়ে যায় র‍্যাব-২।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব, আরামবাগ ও দিলকুশা ক্লাবে হানা দেয় পুলিশ। এসব ক্লাব থেকে ক্যাসিনো বোর্ডসহ বিপুল পরিমাণ জুয়া খেলার সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। এসব সামগ্রীর সঙ্গে টাকা, মদ, বিয়ারও পাওয়া যায়।

সম্প্রতি সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশের পর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এই অভিযানে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন।