শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খিচুড়ি-ডিম খেলেন দুই মন্ত্রী

জিন্দাবাজারের অগ্রগামী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী। সিলেট, ২৯ সেপ্টেম্বর। ছবি: আনিস মাহমুদ
জিন্দাবাজারের অগ্রগামী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী। সিলেট, ২৯ সেপ্টেম্বর। ছবি: আনিস মাহমুদ

জিন্দাবাজারের অগ্রগামী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আজ রোববারের দুপুরটি ছিল ভিন্ন রকমের। সিলেট নগরের এ স্কুলটির শিক্ষার্থীরা আজ তাদের সঙ্গে দুপুরের খাবারের (মিড ডে মিল) সময় পেল দুই মন্ত্রীকে। তাঁরা হলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী। আজ এই স্কুল থেকেই সিলেট বিভাগে ১৪টি বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এরপরই দুই মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খান।

বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিলের জন্য নির্ধারিত টাকা দিয়ে টোকেন সংগ্রহ করে শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী বসেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। এনে দেওয়া হলো দুপুরের খাবার। শিক্ষার্থীদের সঙ্গেই খুব আয়েশ করেই খাবার উপভোগ করলেন দুই মন্ত্রী। দুপুরে খিচুড়ি এবং ডিম দিয়ে খেয়েছেন তাঁরা।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেনো বিশ্বাস করতেই পারছিলেন না, দুই মন্ত্রী সাদামাটা ভাবে এভাবেই দুপুরের খাবারে যোগ দেবেন। দুই মন্ত্রীর সঙ্গে দুপুরের খাবার খেতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে সিলেট সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এর আগে বেলা দেড়টায় বিদ্যালয়ে সিলেট বিভাগের ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক যোগে মিড- ডে মিল কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, রোববার দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন এটিই ছিল নির্ধারিত অনুষ্ঠান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুপুরের খাবারে অংশ নিতে চাওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সানন্দে রাজি হন। এ সময় মন্ত্রী ও উপমন্ত্রী বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিলের নির্দিষ্ট টোকেনের জন্য টাকাও পরিশোধ করেন। পরে বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষেই খাবার পরিবেশন করা হয়।

দুই মন্ত্রীর পাশে বসে খাবারে অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন,‘ আমাদের পাশে বসে যাকে আমরা টেলিভিশন, সংবাদপত্রে দেখি (শিক্ষামন্ত্রী ) তিনি খাবার খাচ্ছেন এটি আমাদের বিশ্বাস হচ্ছিল না। অনেকেই খাবার না খেয়ে তাঁদের দিকে চেয়ে থেকেছি। কিন্তু তাঁরা স্বাচ্ছন্দ্যেই খাবার খেয়েছেন।’

শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রী সঙ্গে খাবার খেতে পেরে ভালো লাগছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবলী পুরকায়স্থ জানান, শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রী বিদ্যালয়ের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু তাঁরা যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খাবারে অংশ নেবেন সেটি জানা ছিল না। খাওয়া শেষে খাবারের প্রশংসা করেছেন দুই মন্ত্রী এবং শিক্ষার্থীদের পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়ে গেছেন।

এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রাথমিকের পর মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে স্কুল ফিডিং নীতিমালার আওতায় মিড-ডে মিল চালু করেছে সরকার। শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য এ কর্মসূচির আওতায় সিলেট বিভাগের ৬২২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থীরা সুবিধা পাচ্ছেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। দু-একটা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সঠিকভাবে চলছে। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা ইস্যুতে ছোটখাটো ও কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন আছে। সমস্যাগুলো আমরা দ্রুততার সঙ্গে মোকাবিলা করছি। আলাপ আলোচনা করছি। যে গুলো রয়েছে সে সমস্যাগুলোও খুব শিগগিরই আমরা নিরসন করতে পারব।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাবেক নারী সাংসদ সৈয়দা জেবুন্নেসা হক, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান প্রমুখ।