রাজধানীর আশপাশে অবৈধ গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাধা জনপ্রতিনিধিরা: জ্বালানি মন্ত্রণালয়

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানীর আশপাশে কিছু জায়গায় স্থানীয় সাংসদ ও জনপ্রতিনিধিদের কারণে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যাচ্ছে না। সাংসদ ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করে এসব জায়গায় অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনে আজ রোববার অনুষ্ঠিত সভায় সংসদীয় কমিটিকে আজ রোববার এ কথা জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় আজ গ্যাস নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের কার্যপত্রে জানা যায়, বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানায়, সরকারি মালিকানাধীন ছয়টি গ্যাস কোম্পানির মধ্যে চারটি কোম্পানি এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত মোট ৯৭ হাজার ৯৩৫টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। এ সময় ৩০৭ কিলোমিটার গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়। গ্যাস লাইনের পুরোটাই ছিল আবাসিক খাতের। বিচ্ছিন্ন করা সংযোগেরও প্রায় সিংহভাগই আবাসিক খাতের। আবাসিকের ৯৭ হাজার ৮৩টি চুলা এ সময় বিচ্ছিন্ন করা হয়। বাকিগুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক খাতের ২০২টি, শিল্প খাতের ৮৭টি, সিএনজি ২২টি এবং ক্যাপটিভ সংযোগ ৪১টি।

বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ক্ষেত্রে কিছু বাধার কথা উল্লেখ করেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, ঢাকার আশপাশে কিছু এলাকায় অবৈধ গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে তা না করার জন্য সাংসদ ও জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে সুপারিশ আসে। তবে সংসদীয় কমিটির বলেছে, সংসদ সদস্য হোক বা অন্য কেউ—কারও চাপ দেখলে চলবে না। অবৈধ গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

বৈঠক শেষে নসরুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বৈঠকে বলেছেন, কিছু জায়গায় অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং জনপ্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। তাঁদের সহযোগিতা নিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার সাংবাদিকদের বলেন, সংসদীয় কমিটি বলেছে, সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের। কী হবে না হবে, তা মন্ত্রণালয় দেখবে। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। সেই সঙ্গে কমিটি গ্যাসে সিস্টেম লস কমিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে বলেছে।

সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ চিহ্নিত করতে নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপাশি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে মন্ত্রণালয়কে পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

শহীদুজ্জামান বলেন, বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গ্যাস সরবরাহে সিস্টেম লস ৫ ভাগের একটু বেশি। কিন্তু এই সিস্টেম লসের পুরোটাই আবাসিক সংযোগসহ বেসরকারি খাতের ৪০ ভাগে। সার কারখানা ও বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত বাকি ৬০ শতাংশে কোনো সিস্টেম লস নেই। এসব বিষয় মাথায় রেখে সিস্টেম লসের প্রকৃত হার নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে।

কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, আলী আজগার, নূরুল ইসলাম তালুকদার, আছলাম হোসেন সওদাগর, মোছা. খালেদা খানম ও বেগম নার্গিস রহমান বৈঠকে অংশ নেন।