সেতুতে নানা উৎপাত, ব্যবহার করে না কেউ

পদচারী–সেতু ব্যবহার না করে সড়কের ওপর দিয়ে পারাপার হয় পথচারীরা। সম্প্রতি নগরের স্টেশন রোড এলাকায়।  প্রথম আলো
পদচারী–সেতু ব্যবহার না করে সড়কের ওপর দিয়ে পারাপার হয় পথচারীরা। সম্প্রতি নগরের স্টেশন রোড এলাকায়। প্রথম আলো

পদচারী–সেতুতে ওঠার মুখে রাখা হয়েছে বাঁশ। তার পাশে হকারদের মালামালের স্তূপ। সিঁড়ি ঘেঁষে বসেছে ভ্রাম্যমাণ দোকানও। এসব ঠেলে ওপরে ওঠে চোখে পড়ে একপাশে জমে আছে ময়লা পানি। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আবর্জনা। এ চিত্র চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট মোড়ের পদচারী–সেতুর। 

একই চিত্র মাত্র তিন শ মিটার দূরত্বে থাকা স্টেশন সড়কের অপর পদচারী–সেতুটিরও। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকলেও সংস্থাটি নিয়মিত তদারকি করে না বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে পদচারী–সেতু দুটি ব্যবহার করতে পারছেন না পথচারীরা।

১৬০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের চট্টগ্রাম নগরে পদচারী–সেতু রয়েছে আটটি। এর মধ্যে নিউমার্কেট ও স্টেশন রোডের দুটি পদচারী–সেতু ব্যবহার অনুপযোগী। এগুলোর বর্তমান যে অবস্থা তাতে চলাচলের কোনো সুযোগ নেই। তবে রাস্তা পারাপারে প্রতিবন্ধকতা থাকায় অন্য ছয়টি পদচারী–সেতু নিয়মিত ব্যবহার করেন পথচারীদের। এ জন্য সেতুগুলোও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রয়েছে।

 সরেজমিনে দেখা যায়, নগরের নিউমার্কেট এলাকার পদচারী–সেতুতে জমে থাকা পানি মশার প্রজননস্থলে পরিণত হয়েছে। এর ওপর দিয়ে হেঁটে চলার মতো কোনো পরিবেশ নেই।

পৌর জহুর হকার্স মার্কেট থেকে কেনাকাটা শেষে বেরিয়ে রাস্তা পার হয়ে তামাকুমুণ্ডি লেনে যান সাজেদা বেগম। পাশের পদচারী–সেতু ব্যবহার না করে মূল রাস্তা দিয়ে হেঁটে পার হন তিনি। পদচারী–সেতু ব্যবহার না করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওঠার মুখে সব হকার বসে আছেন। এ জন্য ব্যবহার করেন না।

নিউমার্কেট এলাকায় পদচারী–সেতুতে ময়লা পানি ও আবর্জনা।  প্রথম আলো
নিউমার্কেট এলাকায় পদচারী–সেতুতে ময়লা পানি ও আবর্জনা। প্রথম আলো

স্টেশন রোডের পদচারী–সেতুর একপাশে পাউরুটির টুকরো শুকানো হচ্ছে। আরেক পাশে পড়ে আছে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য। এসব পরিষ্কার করার কেউ নেই। এই সেতুর নিচ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন পথচারীরা।

এই দুই এলাকায় সম্প্রতি দুপুরে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান করে কাউকে পদচারী–সেতু ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। পথচারীরা নিচের রাস্তার ওপর দিয়ে চলাচল করেন। এতে গাড়ির গতি কমে যাচ্ছে।

মামুনুল ইসলাম নামের এক পথচারী বলেন, স্টেশন রোড দিয়ে চলাচল করা গাড়িগুলোর গতি অনেক বেশি। এরপরও তাঁরা পদচারী–সেতুর পরিবর্তে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হন। কেননা পদচারী–সেতুটি ব্যবহার করার মতো অবস্থায় নেই।

পদচারী–সেতুগুলো জরাজীর্ণ ও অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় ফেলে রাখা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, পদচারী–সেতুগুলো যাতে ব্যবহার উপযোগী হয় সে জন্য নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। নির্মাণ স্থানও পরিবর্তন করা প্রয়োজন আছে।

যোগাযোগ করা হলে প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী বলেন, ‘এগুলো তো (পদচারী–সেতু) নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। ময়লা-আবর্জনা থাকার কথা না।’