স্বামীর মৃত্যুর ৩ দিন পর পুকুর থেকে স্ত্রীর লাশ উদ্ধার

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

ইঁদুর মারার ওষুধের বিষক্রিয়ায় গত শুক্রবার মারা যান স্বামী বিলাস পাল। বিলাসের পরিবারের ভাষ্য, স্ত্রীর ওপর অভিমান করে তিনি ইঁদুর মারার ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর তিনদিন পর গতকাল সোমবার রাতে এলাকার পুকুর থেকে পুলিশ স্ত্রী সামিতি রানীর (২০) লাশ উদ্ধার করে।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের উদয়পুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সামিতির বাবা ভেলটু পালের অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে হত্যার পর পুকুরে লাশ ফেলে দিয়েছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আমজানখোর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আকালু বলছেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্বামীর মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে পানিতে ডুবে আত্মহত্যা করেছেন সামিতি।

বিলাসকে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক বিলাসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। রংপুর নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

পুলিশ ও এলাকাবাসীরা বলছে, বিলাসের মরদেহ সৎকারের পরদিন শনিবার ভোরে বাসা থেকে বেরিয়ে যান সামিতি। তখন থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। গতকাল রাতে তাঁর লাশ এলাকার জগেশ মাস্টারের পুকুরে ভাসতে দেখা যায়। এলাকাবাসী খবর দেওয়ার পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। বালিয়াডাঙ্গী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইসহাক আলী এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আমজানখোর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আকালু মুঠোফোনে জানান, বৃষ্টির কারণে লোকজন পুকুর পাড়ে না যাওয়ায় সামিতির লাশ কেউ দেখতে পায়নি। গতকাল বিকেলে আকাশ কিছুটা পরিষ্কার হলে সামিতির লাশ স্থানীয় লোকজনের নজরে পড়ে।

বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোসাব্বেরুল হক মুঠোফোনে জানান, ‘এর আগে বিলাস পালের আত্মহত্যার বিষয়টি গোপন করেছিলেন তাঁর পরিবারের লোকজন। স্থানীয় চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় মরদেহের সৎকার করার পর আমরা বিষয়টি জানতে পারি। স্বামীর মৃত্যুর পর সামিতির নিখোঁজের বিষয়টি তাঁর বাবার বাড়ির লোকজন থানায় জানিয়েছিলেন।’

ওসি আরও জানান, গতকাল পুকুর থেকে সামিতির লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঠাকুরগাঁও জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে সামিতির মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।