সামরিক অস্ত্রের বিপরীতে অহিংস অস্ত্র গুরুত্বপূর্ণ: সৈয়দ আবুল মকসুদ

আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস উপলক্ষে মানববন্ধনের আয়োজন করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। শাহবাগ, ঢাকা, ২ অক্টোবর। ছবি: প্রথম আলো
আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস উপলক্ষে মানববন্ধনের আয়োজন করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। শাহবাগ, ঢাকা, ২ অক্টোবর। ছবি: প্রথম আলো

লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, ‘আমরা সব সময় শান্তির জন্য চেষ্টা করেছি। সব সম্প্রদায়ের মিলনের কথা বলেছি। একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। আমরা সে লক্ষ্যে অবিচল। সংঘাতমুক্ত সমাজ, সংঘাতমুক্ত পৃথিবী, যুদ্ধমুক্ত বিশ্ব গঠনে মহাত্মা গান্ধীর দর্শন অত্যন্ত উপযোগী। সামরিক অস্ত্রের বিপরীতে অহিংস অস্ত্র গুরুত্বপূর্ণ।’

রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আজ বুধবার সকালে এক মানববন্ধনে সৈয়দ আবুল মকসুদ এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস উপলক্ষে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, বিংশ শতাব্দীতে দুটি বিশ্বযুদ্ধ হয়েছে। সেই বিশ্বযুদ্ধ দিয়ে পৃথিবীর সমস্যার সমাধান হয়নি। পৃথিবীতে শান্তির প্রয়োজন। আর শান্তির জন্য অহিংস নীতি অপরিহার্য। আজ সারা বিশ্বে সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে, জাতিতে জাতিতে যে বিদ্বেষ ও হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে, তা থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করার জন্য মহাত্মা গান্ধীর অহিংস বাণী অব্যর্থ ওষুধ। হিংসা দিয়ে পৃথিবীতে কখনোই কোনো সমস্যার সমাধান হয়নি।

সহিংসতা শুধু ধ্বংস করে, সৃষ্টি করে না উল্লেখ করে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘যেখানে সহিংসতা আছে, সেখানে ইতিবাচক কিছু ঘটে না। সহিংসতা, দ্বন্দ্ব, হানাহানি জাতি হিসেবে আমাদের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের এগিয়ে যেতে হলে এই দ্বন্দ্ব- হানাহানির অবসান করতে হবে, সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।’

আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস উপলক্ষে আজ সুজন সারা দেশে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। ঢাকার মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণপণ যুদ্ধ করেছিলেন একটি গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য। তাঁরা চেয়েছিলেন এমন একটি দেশ, যেখানে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং সম্প্রীতি বিরাজ করবে। কিন্তু বর্তমানে চারদিকে রাজনীতি, ধর্মসহ বিভিন্ন কারণে হানাহানি, দ্বন্দ্ব আর সহিংসতা দেখা যাচ্ছে।

সুজনের মানববন্ধনে ১২ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শান্তি প্রতিষ্ঠায় দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির বদলে আদর্শবাদী রাজনীতি প্রণয়ন, গুম, খুন, অপহরণসহ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো, রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন পদ্ধতি চালু করা।

মানববন্ধনে সুজনের ঢাকা মহানগর সমিতির সহসভাপতি মো. নাদিম হোসেন, সহসাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম, অর্থ সম্পাদক মো. শহীদুল্লাহ, ঢাকা জেলা সমিতির অর্থ সম্পাদক মাহবুবুল হক, সহসম্পাদক সেলিনা হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।