টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বগুড়ার ধুনট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার বিকেলে গ্রেপ্তারের পর আদালতে নিলে সন্ধ্যায় তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তার ওই সভাপতির নাম সুলতান মাহমুদ (৩৫)। তিনি ধুনটের সদরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁকে পুলিশ গোসাইবাড়ী সড়কের চান্দারপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুলতান মাহমুদ ধুনট ২০১৭ সালে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর থেকে তিনি প্রশাসনিক তদবির, নিয়োগ–বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশ কনস্টেবল, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্বাস্থ্য বিভাগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে মাহমুদ একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এসব চাকরি প্রত্যাশীকে তিনি জানান, চাকরি না হলে টাকা ফেরত পাবেন।

সূত্র জানায়, সুলতান মাহমুদ চাকরিপ্রত্যাশীদের রূপালী ব্যাংক ধুনট শাখায় থাকা তাঁর সঞ্চয়ী হিসেবের বিপরীতে একটি করে চেক দিতেন। চাকরি দিতে না পারলে আবেদনকারীরা এক মাসের মধ্যে ওই ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে পারবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি। তবে তাঁর ওই ব্যাংক হিসাবে কোনো টাকা জমা ছিল না। চাকরি না পেয়ে অনেকে ব্যাংকে টাকা তুলতে গিয়ে অপর্যাপ্ত তহবিলের কারণে ব্যর্থ হন। এ জন্য অনেকে তাঁর বিরুদ্ধে বগুড়ার অর্থঋণ আদালতে চেক জালিয়াতির মামলা করেছেন। আদালত থেকে তিনটি মামলায় সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

পুলিশি হেফাজতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ বলেন, অনেকের সঙ্গে তাঁর ব্যবসায়ী লেনদেন আছে। চাকরি দেওয়ার নামে কারও কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাঁদের লোক দিয়ে এসব মিথ্যা মামলা করেছেন।

রূপালী ব্যাংক ধুনট শাখা ব্যবস্থাপক শাহানুল হাসান বলেন, সুলতান মাহমুদের নামে এই শাখায় প্রায় ৭ লাখ টাকা ঋণ আছে। এ ছাড়া সুলতান মাহমুদের স্বাক্ষরিত অর্ধ কোটি টাকার প্রায় ৭টি চেক প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। আরও অনেকেই এসেছিলেন। এসব জালিয়াতির ব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আদালতে দায়ের করা তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।