সেলিম প্রধান দুই সহযোগীসহ চার দিনের রিমান্ডে

অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো ব্যবসার মূল হোতা সেলিম প্রধানকে আদালতে হাজির শেষে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত, ঢাকা, ৩ সেপ্টেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার
অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো ব্যবসার মূল হোতা সেলিম প্রধানকে আদালতে হাজির শেষে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত, ঢাকা, ৩ সেপ্টেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো ব্যবসার মূল হোতা সেলিম প্রধানসহ তাঁর দুই সহযোগীকে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। অপর দুই সহযোগী হলেন আক্তারুজ্জামান ও রোকন।Ü

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম মইনুল ইসলাম শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা শেখ রকিবুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, বুধবার তিন আসামিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম। ওই দিন আদালত সেলিম প্রধানসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার রিমান্ড বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন। শুনানি শেষে আদালত সেলিম প্রধান ও তাঁর দুই সহযোগীকে চার দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন।

শেখ রকিবুর রহমান জানান, সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মানি লন্ডারিং ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। মামলা দুটিতে আগামী ৩ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে সেলিম প্রধানের ব্যাংকক যাওয়ার কথা ছিল। টিজি ৩২২ নম্বর ফ্লাইট থেকে তাঁকে নামানো হয়। সেলিম প্রধানকে আটক করা হয়। আটকের পর সেলিম প্রধানের গুলশান ও বনানীর অফিস এবং বাসায় অভিযান চালিয়ে ২৯ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকা, ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকার সমপরিমাণ ২৩টি দেশের মুদ্রা, ১২টি পাসপোর্ট, ১৩টি ব্যাংকের ৩২টি চেক, ৪৮ বোতল বিদেশি মদ, একটি বড় সার্ভার, চারটি ল্যাপটপ ও দুটি হরিণের চামড়া উদ্ধার করে র‌্যাব। হরিণের চামড়া উদ্ধারের ঘটনায় বন্য প্রাণী সংরক্ষণ নিরাপত্তা আইনে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

মাদক ও অর্থ পাওয়ার কারণে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে গতকাল বুধবার গুলশান থানায় র‍্যাবের পক্ষ থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও মানিলন্ডারিং আইনে দুটি মামলা হয়েছে।

সেলিম প্রধানের সব ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে করে তাঁর নিজের ও প্রতিষ্ঠানের হিসাব থেকে আর কোনো টাকা উত্তোলন করা যাবে না। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গত মঙ্গলবার সব ব্যাংকের কাছে পাঠানো চিঠিতে এ নির্দেশনা দিয়েছে।

অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো ব্যবসার মূল হোতা সেলিম প্রধানকে আদালতে হাজির শেষে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত, ঢাকা, ৩ সেপ্টেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার
অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো ব্যবসার মূল হোতা সেলিম প্রধানকে আদালতে হাজির শেষে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত, ঢাকা, ৩ সেপ্টেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার

সেলিম প্রধানের সঙ্গে আর্থিক খাতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। সেলিম প্রধানের জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপারসে বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই ছাপা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট ও অফিসের নথিপত্রও ছাপানো হয়। তাঁর এই প্রতিষ্ঠান রূপালী ব্যাংকের শীর্ষ ঋণখেলাপির একটি। ২০১৮ সালে ঋণটি পুনঃ তফসিল করা হয়। সেলিমের কাছে ব্যাংকের পাওনা প্রায় ১০০ কোটি টাকা।

আর যাঁরা রিমান্ডে রয়েছেন
সেলিম প্রধান ছাড়া যুবলীগ নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম দ্বিতীয় দফায় মাদক ও অস্ত্র মামলায় ৯ দিনের রিমান্ডে আছেন। অস্ত্র ও মাদক মামলায় ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক থেকে বহিষ্কার হওয়া খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া দ্বিতীয় দফায় ১০ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। মাদক আইনে করা মামলায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের ডিরেক্টর ইনচার্জ ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক (বিসিবি) লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজ এবং রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ফু-ওয়াং ক্লাব থেকে গ্রেপ্তার তিন কর্মচারী ক্যাশিয়ার জাহিদুর রহমান মিয়া, কর্মচারী চঞ্চল পালমা ও জেভিআর জেরি ডি কস্তা আট দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।