ছাত্রলীগের দখলে মধুর ক্যানটিনের চেয়ার-টেবিল, মেঝেতে ছাত্রদল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের মেঝেতে বসে ছাত্রদলের প্রতীকী প্রতিবাদ। ছবি: প্রথম আলো
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের মেঝেতে বসে ছাত্রদলের প্রতীকী প্রতিবাদ। ছবি: প্রথম আলো

নিয়মিত রাজনৈতিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে আসেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু আগে থেকেই ক্যানটিনের চেয়ার-টেবিল দখলে নেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। বসার জায়গা না পেয়ে ক্যানটিনের মেঝেতে বসে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে মধুর ক্যানটিনে প্রবেশ করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। ক্যানটিনে তাঁরা নিয়মিত যে জায়গাটিতে বসেন, সেখানে কোনো চেয়ার-টেবিল ছিল না। আগে থেকেই সব চেয়ার-টেবিল দখল করে বসে ছিলেন ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। চেয়ার-টেবিল দখলের প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে তাঁরা মেঝেতে বসে পড়েন। বেলা ১১টার দিকে ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান মধুর ক্যানটিনে এসে একই চিত্র দেখেন, তিনিও মেঝেতে বসে পড়েন।

ছাত্রলীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা প্রথম আলোকে বলেন, অক্টোবরের শুরুর দিন থেকে মধুর ক্যানটিনের চেয়ার-টেবিল দখলে রাখতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সকাল ৯টা থেকেই ক্যানটিনে অবস্থান নিতে বলা হয়েছে, যাতে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সেখানে বসার জায়গা না পান।

তবে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান চেয়ার-টেবিল দখলে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘অন্য দিনগুলোর মতোই আমরা মধুর ক্যানটিনে বসেছি। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা চেয়ার-টেবিল না পেলে আমাদের কী করার আছে? আমরা কি চেয়ার-টেবিল বানিয়ে দেব?’

বিষয়টিকে ‘রাজনৈতিক অসৌজন্য’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। তিনি প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘এই চিত্র সারা বাংলাদেশের। একটা শ্রেণি জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে লুটপাট করে কীভাবে অট্টালিকার মালিক হচ্ছে ও নিপীড়ন চালাচ্ছে; আরেকটি শ্রেণি কীভাবে নিষ্পেষিত হয়ে মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। যত বাধাই আসুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও মধুর ক্যানটিনে আমাদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে। দেশের মানুষ তো দেখছে, আমাদের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে।’

বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মধুর ক্যানটিনের মেঝেতে অবস্থানের পর নেতা-কর্মীদের নিয়ে বেরিয়ে যান ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কিছুক্ষণ ক্যানটিনের বাইরে অবস্থান করার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। মধুর ক্যানটিন থেকে শুরু হয়ে কলাভবন, স্মৃতি চিরন্তন চত্বর দিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়।