আফগানিস্তান ফেরত হুজি নেতা আতিকুল্লাহসহ তিনজন রিমান্ডে

সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি, বি) সদস্য আতিকুল্লাহ ওরফে আসাদুল্লাহ ওরফে জুলফিকারসহ (৪৯) তিনজনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অপর দুই আসামি হলেন বোরহান উদ্দিন রাব্বানী (৪২) ও মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ওরফে শামীম (৪৩)।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত আজ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।

এর আগে আতিকুল্লাহসহ তিনজনকে ঢাকার আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন জানায় পুলিশ। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামির পক্ষের বক্তব্য শুনে প্রত্যেক আসামির চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গতকাল বুধবার রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে  ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের কাউন্টার টেররিজম বিভাগ।

পুলিশ বলছে, জঙ্গি নেতা আতিকুল্লাহ আফগানিস্তানে গিয়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আতিকুল্লাহ আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় সেখানে যান। আফগানিস্তানে আল কায়েদার শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেন, আইমান আল জাওয়াহিরি ও তালেবান নেতা মোল্লা মুহাম্মদ ওমরের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন তিনি। আতিকুল্লাহ সম্প্রতি দেশে ফেরেন।

ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান যে মো. আতিকুল্লাহ হুজির মুফতি হান্নানের ১৯৯৬ সালে গঠিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি হুজির বায়তুল মাল ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দায়িত্বশীল ছিলেন। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রথমদিকে তিনি দুবাই হয়ে সৌদি আরব পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপন করেন। তিনি সাংগঠনিক কাজে একাধিকবার পাকিস্তানে যান।

ডিএমপি আরও জানায়, আতিকুল্লাহ আফগানিস্তান ফেরত যোদ্ধা। এ ছাড়া তিনি বোমা বিশেষজ্ঞ। দীর্ঘদিন বিদেশে পলাতক থেকে চলতি বছরের মার্চে দেশে ফেরেন আতিকুল্লাহ। দেশে ফিরে সংগঠনের পুরোনো সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সাংগঠনিক কাজে সক্রিয় করার কাজ করছিলেন তিনি। পাশাপাশি আতিকুল্লাহ নতুন সদস্য সংগ্রহ করে সংগঠনের কার্যক্রম চালু করার মিশন নিয়ে ব্যাপক কর্মতৎপরতা চালাচ্ছিলেন। ইতিমধ্যে তিনি সংগঠনকে গতিশীল করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংগঠনিক সফর করেন এবং দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে সংগঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিলেন আতিকুল্লাহ। পাকিস্তান, দুবাই ও সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশের জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে।

গ্রেপ্তার অন্য দুজনের মধ্যে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ওরফে শামীম হুজিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি এবং মো. বোরহান উদ্দিন রাব্বানী সংগঠনের ফেনী জেলার দায়িত্বে আছেন। তাঁরা বর্তমানে কাশ্মীর সমস্যা এবং রোহিঙ্গা পরিস্থিতিকে পুঁজি করে পরস্পর যোগসাজশে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন।