প্রথমে মোটরসাইকেল পছন্দ করেন, পরে সেটা নিয়ে চম্পট

মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে সাত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঠাকুরগাঁও পুলিশ। ঠাকুরগাঁও থানা, ঠাকুরগাঁও, ২ অক্টোবর। ছবি: সংগৃহীত
মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে সাত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঠাকুরগাঁও পুলিশ। ঠাকুরগাঁও থানা, ঠাকুরগাঁও, ২ অক্টোবর। ছবি: সংগৃহীত

বাজারে চাহিদা আছে—এমন একটি মোটরসাইকেল বেছে নেন তাঁরা। এরপর পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝতে মোটরসাইকেলটি ঘিরে চালানো হয় আনাগোনা। পরিবেশ অনুকূলে হলে তালা ভেঙে মোটরসাইকেল নিয়ে চম্পট দেন। একটি মোটরসাইকেল নিয়ে চম্পট দিতে তাঁদের সময় লাগে বড়জোর দুই থেকে তিন মিনিট।

ঠাকুরগাঁও পুলিশ মোটরসাইকেলচোর চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বরাতে নিজ কার্যালয়ের সভাকক্ষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চুরির এমন কৌশলে বর্ণনা করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।

ঠাকুরগাঁও শহরের বাজারপাড়া মহল্লার বাসিন্দা এ কে এম ফজলুল বারির একটি মোটরসাইকেল চুরির মামলায় তদন্ত নামে ঠাকুরগাঁও থানার পুলিশ। গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত লালমনিরহাট ও নীলফামারীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এতে আটটি চোরাই মোটরসাইকেলসহ চোরচক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ উপজেলার দলগ্রাম গ্রামের মো. আশরাফ (৩৫), বালাপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলী (২৫), শ্রীখাতা গ্রামের নিশিকান্ত (২৩), নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনগাছা চাপানি গ্রামের হুদয় (২৫), জলঢাকা উপজেলার পশ্চিম কাঁঠালী গ্রামের মো. লেলিন (২৭), একই উপজেলার মো. লেলিন (২৩) ও চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলাম (২৫)।

সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, গ্রেপ্তারের পর ওই মোটরসাইকেলচোর চক্রের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা মোটরসাইকেল চুরির কৌশল, সংরক্ষণ, ইঞ্জিনের চেচিস নম্বর পরিবর্তন ও বিক্রির প্রক্রিয়া সম্পর্কে এসব তথ্য দেন।

পুলিশ সুপার বলেন, চুরির কৌশলে হিসেবে মোটরসাইকেলসহ চালক কোথায় যান, কী করেন—সবকিছু অনুসরণ করতেন তাঁরা। অনুসরণের একপর্যায়ে সুযোগ বুঝে তাঁরা মোটরসাইকেলের তালা ভেঙে সেটা চুরি করতেন। এ কাজে তাঁদের সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন মিনিট সময় লাগত। এরপর কয়েক হাত ঘুরে সেই মোটরসাইকেল চলে যেত আশপাশের কোনো প্রত্যন্ত অঞ্চলে। পরে অবস্থা বুঝে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় নিয়ে বিক্রি করা হতো।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পুলিশকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কর্মকর্তাদের সিল জালিয়াতি করে চোরাই মোটরসাইকেলের নকল কাগজপত্র তৈরি করতেন তাঁরা। পরবর্তী সময়ে নকল কাগজপত্রসহ চুরি করা মোটরসাইকেলগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা হতো। তাঁদের সঙ্গে ঠাকুরগাঁও জেলার আরেকটি চোরচক্রের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের খাতিরে তাদের পরিচয় গোপন রেখেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।