প্রেমের অভিনয় করে চোর ধরলেন নারী পুলিশ

প্রেমের অভিনয় করে ট্রাক্টর চোর চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছেন সখীপুর থানার নারী কনস্টেবল পারুল আক্তার। সখীপুর, টাঙ্গাইল, ৩ অক্টোবর। ছবি: সংগৃহীত
প্রেমের অভিনয় করে ট্রাক্টর চোর চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছেন সখীপুর থানার নারী কনস্টেবল পারুল আক্তার। সখীপুর, টাঙ্গাইল, ৩ অক্টোবর। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, তাদের এক নারী সদস্য ট্রাক্টর চোর চক্রের এক সদস্যকে ধরেছেন। তবে এ জন্য ওই নারী পুলিশকে প্রেমের অভিনয় করতে হয়েছিল। গত শুক্রবার ট্রাক্টর চোর চক্রের ওই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এ সময় তিনি বলেন, সংঘবদ্ধ চোর চক্রকে ধরার স্বার্থে গ্রেপ্তারের বিষয়টি এত দিন গোপন রাখা হয়েছিল।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম সাব্বির আহমেদ ওরফে বাবু (৩৫)। সাব্বির আহমেদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তানভীর আহমেদ (৩০) নামের আরেক ব্যক্তিকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, সাব্বির আহমেদ ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা এলাকার বাসিন্দা। তানভীর কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলার উত্তর মোল্লাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা।

সখীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল্লাহ বলেন, ১১ সেপ্টেম্বর সকালে সাব্বির জমি চাষ করবেন বলে লাক মিয়া নামের এক ট্রাক্টরমালিককে সখীপুরের কচুয়া বাজারে আসতে বলেন। লাক মিয়া ট্রাক্টর চালিয়ে কচুয়া বাজারে আসেন। এরপর সংঘবদ্ধ চোরেরা লাক মিয়াকে জুসের সঙ্গে অচেতনকারী ওষুধ খাওয়ায়। এরপর তারা লাক মিয়ার ট্রাক্টর ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। লাক মিয়াকে বাজারের একটি ঘরে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সুস্থ হয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর লাক মিয়া বাদী হয়ে সখীপুর থানায় মামলা করেন।

এসআই বলেন, ট্রাক্টর নেওয়ার কয়েক দিন পর সাব্বির মোবাইল ফোনে লাক মিয়ার কাছে টাকা দাবি করেন। বিকাশের মাধ্যমে দুই লাখ টাকা দিলে ট্রাক্টর ফেরত দেওয়া হবে বলে জানান সাব্বির। লাক মিয়া বিষয়টি থানার পুলিশকে জানান। আসামি সাব্বিরকে ধরতে সখীপুর থানার নারী কনস্টেবল পারুল আক্তার ওই নম্বরে ফোন দিয়ে প্রেমের অভিনয় করেন। একপর্যায়ে সাব্বির ওই নারী পুলিশের প্রেমে পড়ে যান। ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে সাব্বির তাঁর প্রেমিকা পারুলের সঙ্গে দেখা করতে সখীপুর আসেন। সখীপুর পিএম মডেল গভ. স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে পারুলের সঙ্গে সাব্বিরের দেখা হয়। সাদাপোশাকে পুলিশ ওই বিদ্যালয়ের আশপাশে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে নারী পুলিশ পারুল সাব্বিরের জামার কলার ধরে টেনে এনে অন্য পুলিশ সদস্যদের কাছে তুলে দেন।

এসআই ওবায়দুল্লাহ বলেন, সাব্বিরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তানভীরকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পুলিশ লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর ট্রাক্টরটি উদ্ধার করে।

সখীপুর থানার ওসি আমির হোসেন বলেন, সাব্বির ট্রাক্টরটি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। পুলিশ ট্রাক্টর বিক্রির ৫০ হাজার টাকাও উদ্ধার করেছে।

ওসি আরও বলেন, এর আগে সখীপুর থানার এসআই ফয়সাল আহমেদ রিকশাওয়ালা সেজে হত্যা মামলার আসামি ধরেন।

আরও পড়ুন: