৩২ ঘণ্টা পর বরিশালে রিকশা শ্রমিক-মালিকদের অনশন প্রত্যাহার

গত বুধবার বরিশাল নগরের অশ্বিনীকুমার হলের সামনে অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। ছবি: ফাইল
গত বুধবার বরিশাল নগরের অশ্বিনীকুমার হলের সামনে অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। ছবি: ফাইল

দাবি পূরণের আশ্বাসে বরিশালে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিক–মালিকেরা ৩২ ঘণ্টা পর আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলা সদস্যসচিব মনীষা চক্রবর্তী অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে স্থানীয় নাগরিক সমাজের ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নগর ট্রাফিক পুলিশের উপকমিশনারের কার্যালয়ে যায়। তারা রিকশা শ্রমিকদের দাবি তুলে ধরে এর সমাধানের জন্য আলোচনা করে। এরপর সন্ধ্যা সাতটার দিকে তারা অনশনস্থলে এসে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয় এবং অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে বলে। এতে অনশনরত শ্রমিকেরা সম্মত হলে প্রতিনিধিদলের সদস্য সচেতন নাগরিক কমিটির বরিশাল জেলা সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা আন্দোলনরত নেতা মনীষা চক্রবর্তীকে শরবত পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান।

মনীষা চক্রবর্তী বলেন, অনশনে শ্রমিকদের অনড় অবস্থানের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক হয়। পরে সেখানে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের পাশাপাশি নির্ধারিত পথে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের সিদ্ধান্ত হয় এবং জব্দ করা ব্যাটারি, মোটর আদালতের মাধ্যমে ছাড়িয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর আলোচনায় অংশ নেওয়া প্রতিনিধিদলের সদস্যরা অনশনস্থল নগরের অশ্বিনীকুমার হলের সামনে এসে এসব বিষয় জানালে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বরিশাল নগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) মো. খায়রুল আলম বলেন, আদালতের দেওয়া সিদ্ধান্ত অনুসারে হলুদ ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা অবৈধ। এর মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশার কোনো অনুমোদন না থাকায় তা পুরো শহর থেকে উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়। তবে যেহেতু সিটি করপোরেশন থেকে হলুদ অটোরিকশার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল এবং এর সঙ্গে বহু লোকের জীবন-জীবিকা জড়িত রয়েছে, তাই সেগুলো একেবারে উচ্ছেদ না করে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, অভিযানে যেসব রিকশার ব্যাটারি জব্দ করে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো সংশ্লিষ্টদের আদালতে আবেদন করে ছাড়িয়ে নিতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পর্যায়ক্রমে বরিশাল নগর এলাকায় অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হবে। ব্যাটারিচালিত এসব রিকশার শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের দিকে যাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

১ অক্টোবর থেকে বরিশাল নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে তিন চাকার হলুদ ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করে নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। এ ছাড়া ব্যাটারিচালিত রিকশা পুরোপুরি উচ্ছেদে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন অটোরিকশা শ্রমিক–মালিকেরা। বাসদের জেলা সদস্যসচিব মনীষা চক্রবর্তীর নেতৃত্বে এই অনশন কর্মসূচি শুরু হয়।