পানি ঢুকছে রাজশাহী নগরে

পদ্মায় পানি কমতে শুরু করেছে। গতকাল শুক্রবার সারা দিনে রাজশাহী পয়েন্টে তিন সেন্টিমিটার ও পাবনায় দশমিক দুই সেন্টিমিটার পানি কমেছে। রাজশাহীতে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পাবনায় এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। স্লুইসগেটের ফাঁক গলে পানি ঢুকে রাজশাহী নগরের কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

পদ্মার রাজশাহী পয়েন্টে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পানির উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ১৯ মিটার। গতকাল সন্ধ্যায় কমে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ১৬ মিটারে। পাবনায় গতকাল বিকেলে কিঞ্চিৎ উন্নতি দেখা গেছে। ঈশ্বরদী উপজেলার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমার স্তর ১৪ দশমিক ২৫ মিটার। গত ৪৮ ঘণ্টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে এই স্তর ছিল ১৪ দশমিক ৩৩ মিটার। গতকাল বিকেলের পরিমাপে এই স্তর ২ সেন্টিমিটার কমে ১৪ দশমিক ৩১ মিটারে দাঁড়িয়েছে।

পাউবোর পাবনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, উজানে আর ভারী বৃষ্টিপাত না হলে খুব দ্রুতই পানি নেমে যাবে।

রাজশাহী নগরের সাগরপাড়া, বোসপাড়া, আহমদপুর ও কালুমিস্ত্রির মোড় এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী বলছেন, তাঁদের এলাকার বিপরীতে শহর রক্ষা বাঁধে দুটি স্লুইসগেট রয়েছে। পানি বাড়ার কারণে এই গেট বন্ধ করে দেওয়া হলেও ফাঁকফোকর গলে পানি শহরে ঢুকছে।  

>

বন্যা পরিস্থিতি
জমি থেকে কাঁচা ধন কাটছেন বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা
এখনো পানিবন্দী আছেন কয়েক হাজার মানুষ

রাজশাহী নগরের কালুমিস্ত্রির মোড় এলাকার বাসিন্দা আরাফাত বলেন, রাজশাহী শহরে বৃষ্টির পর প্রায় দুই ঘণ্টার মধ্যেই পানি নেমে যায়। এবার তাঁদের এলাকার রাস্তা বেশ কয়েক দিন থেকে ডুবে আছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ও পাকা ইউনিয়নের বন্যায় প্লাবিত এলাকার ৩০০ পরিবারের মধ্যে গতকাল ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

পাবনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা শেখ সিরাজুল ইসলাম জানান, সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী ঈশ্বরদী উপজেলায় ৩ হাজার ১০০, জেলা সদরে ১ হাজার ৭৫০ ও সুজানগর উপজেলায় ১ হাজার ৩৩০টি পরিবার মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পাবনায় কাঁচা ধান কাটছেন চাষি

পাবনা সদর, ঈশ্বরদী ও সুজানগর উপজেলায় বন্যার পানি স্থির হওয়ায় এখন কাঁচা ধানই কেটে নিচ্ছেন কৃষকেরা।

গতকাল সকালে সদরের দোগাছি ইউনিয়নের পদ্মা তীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফসলের মাঠে বইছে ঢেউ। পানিতে ডোবা কাঁচা ধান কেটে ঘরে তুলছেন কৃষক। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজাহার আলী বলেন, পদ্মা তীরবর্তী এলাকাগুলোতে চলতি মৌসুমে মাষকলাই, রোপা আমন ও শীতকালীন সবজি গাজর, শিম, মুলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, কাঁচা মরিচ ও কলা আবাদ হয়েছিল। আবাদি জমির মধ্যে ২ হাজার ৪৭ হেক্টর ফসল পুরো নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।