গ্রামটির নারীরাই করছেন দুর্গাপূজার সব আয়োজন

এ গ্রামের নারীরাই দুর্গাপূজার আয়োজন করে থাকেন। ছবি: প্রথম আলো
এ গ্রামের নারীরাই দুর্গাপূজার আয়োজন করে থাকেন। ছবি: প্রথম আলো

গ্রামটির প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষেরা পেশায় ঢুলি। দুর্গাপূজার এই সময়ে ঢাক বাজাতে তাঁরা ছুটে গেছেন দেশের বিভিন্ন স্থানের পূজামণ্ডপে। বলা যায়, গ্রামটি এখন প্রায় পুরুষশূন্য। তাই বলে কী থেমে থাকবে পূজা-পার্বণের আয়োজন? না, থেমে যায়নি। ১১ বছর ধরে গ্রামটিতে শারদীয় দুর্গাপূজার সব আয়োজন করছেন নারীরাই।

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম ভাতার মাড়ির পাথারের হাড়িপাড়া গ্রামের নারীরা এবারও দুর্গাপূজার আয়োজন করেছেন। নিজেরাই গড়েছেন প্রতিমা। পুরোহিত, ঢুলি সবাই নারী। সুন্দর সাজসজ্জায় গড়ে তোলা হয়েছে পূজামণ্ডপ। সেখানে চলছে পূজা-অর্চনা।

আজ রোববার ছিল মহাঅষ্টমীর পূজা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একজন নারী মণ্ডপে ঢাক বাজাচ্ছেন। আর শত শত নারী ছুটে আসছেন পূজা দেখতে। কেউ কেউ অঞ্জলি আরতি দিচ্ছেন।

পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সভাপতি দীপালি রানী বলেন, ‘আমাদের এই গ্রামটিতে ২৫টি পরিবার রয়েছে। পরিবারের কর্তারা পেশাগত কাজে বাইরে থাকেন। তাই নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে পূজা দিচ্ছি।’

দুর্গাপূজা ঘিরে গ্রামটির নারীদের ব্যস্ততা। ছবি: প্রথম আলো
দুর্গাপূজা ঘিরে গ্রামটির নারীদের ব্যস্ততা। ছবি: প্রথম আলো

দুর্গা মণ্ডপের সাধারণ সম্পাদক গীতা রানী বলেন, ‘আমাদের স্বামীরা পেশায় ঢুলি। তাঁরা ঢাক বাজানোর জন্য এ সময়টায় নানা জায়গা থেকে আমন্ত্রণ পান। ফলে এ গ্রামের নারীদেরই পূজার সব আয়োজন করতে হয়।’

গ্রামটির পূজামণ্ডপে আনসার–ভিডিপির কয়েকজন সদস্যকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। তাঁরাও নারী। স্বেচ্ছাসেবকের কাজও নারীরা করছেন।

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) পরিমল কুমার সরকার বলেন, হাড়িপাড়ার নারীরা বেশ উৎসাহ নিয়ে কাজ করছেন। তাঁদের এই উৎসব আয়োজনে প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা করছে।