সম্মিলিত উৎসব উদ্যাপনের পরিবেশ সৃষ্টিই বড় অর্জন: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামকৃষ্ণ মিশনের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে বক্তৃতা করেন। ঢাকা, ০৭ অক্টোবর। ছবি: পিআইডি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামকৃষ্ণ মিশনের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে বক্তৃতা করেন। ঢাকা, ০৭ অক্টোবর। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সব ধর্মাবলম্বীর জন্য যথাযথ মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিয়ে দেশে উৎসব উদ্‌যাপনের সহনীয় পরিবেশ সৃষ্টিতে তাঁর সরকার সমর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সোমবার বিকেলে শারদীয় দুর্গোৎসবের মহানবমীর দিনে রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উৎসবগুলোতে সবাই আমরা এক হয়ে উদ্‌যাপন করি। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় একটা অর্জন। আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে চলতে শিখেছি।’ তিনি এ সময় দেশে এবং প্রবাসে অবস্থানকারী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব সবার।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। বাংলাদেশে ধর্মবর্ণ-নির্বিশেষে সবাই আমরা এক হয়ে পথ চলি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যেকের ধর্মকে আমরা সম্মান করি এবং আমরা চাই আমাদের দেশে শান্তি বজায় থাকুক। এ দেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি—এ ধরনের যেসব ব্যাধি সমাজকে নষ্ট করে, দেশকে নষ্ট করে, পরিবারকে নষ্ট করে, পারিবারিক জীবনকে অতিষ্ঠ করে, তা যেন না থাকে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে শান্তি বজায় থাকবে। বাংলাদেশের সমৃদ্ধি হবে। বাংলাদেশের উন্নতি হবে। বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে, এটাই আমরা চাই।’

বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে চমৎকার একটা পরিবেশ যে আমাদের ঈদের জামাত যখন অনুষ্ঠিত হয়, তখন আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের যুবসমাজ সেখানে কিন্তু নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে। আবার যখন পূজা-পার্বণ হয়, আমাদের মুসলমান সমাজের যুবকেরা সেখানে উপস্থিত থাকে, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘একটা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ যে আমরা সৃষ্টি করতে পেরেছি। এটাই হচ্ছে সব ধর্মের মূলকথা—শান্তি ও মানবতা। এই শান্তি এবং মানবতার লক্ষ্য নিয়েই বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ এভাবে এগিয়ে যাবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি।’

এর আগে রামকৃষ্ণ মিশনে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন ঢাকার প্রধান স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ। প্রধানমন্ত্রী সেখানে পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখেন। পরে প্রধানমন্ত্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনে যান এবং সেখানে বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক মানুষের মধ্যে যদি সহনশীলতা থাকে এবং একে অপরের প্রতি সম্মান এবং সহানুভূতি থাকে, সেটাই একটি দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারে এবং একটি দেশ উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী হতে পারে। তিনি বলেন, ‘বাবা-মা, আপনজন হারানোর শোক-ব্যথা বুকে নিয়েও দিন-রাত পরিশ্রম করেছি, শুধু একটা কথা চিন্তা করেছি, এই দেশকে গড়ে তুলতে হবে, দেশের মানুষের ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে হবে। যে মানুষগুলোর কথা চিরদিন আমার বাবা চিন্তা করেছেন। আমার বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা যে জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং চেয়েছেন এই দেশের মানুষ যেন একটা সুন্দর জীবন পায়।’