এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড: আবরারের বাবা

আবরার ফাহাদের মরদেহ তাঁর পৈতৃক ভিটা রায়ডাঙ্গায় পৌঁছালে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর মা ও ছোট ভাই। কুষ্টিয়া, ৮ অক্টোবর। ছবি: হাসান মাহমুদ
আবরার ফাহাদের মরদেহ তাঁর পৈতৃক ভিটা রায়ডাঙ্গায় পৌঁছালে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর মা ও ছোট ভাই। কুষ্টিয়া, ৮ অক্টোবর। ছবি: হাসান মাহমুদ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মরদেহ তাঁর পৈতৃক ভিটা রায়ডাঙ্গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি রায়ডাঙ্গা গ্রামে পৌঁছালে সেখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সহস্রাধিক মানুষ সেখানে জড়ো হন। আবরারের স্বজনদের সঙ্গে তাঁরাও কাঁদছিলেন। এমনকি পুলিশ সদস্যদেরও এ সময় কাঁদতে দেখা যায়।

সেখানে কান্নারত অবস্থায় ক্ষোভের সঙ্গে আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্ বলেন, ‘এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। যে ছেলেটা বিকেল ৫টায় ঢাকায় পৌঁছাল, তাঁকে ৮টার দিকে নির্যাতন করার জন্য ডেকে নিয়ে গেল। ছয় ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চালাল, এটা অবশ্যই পরিকল্পিত।’

বুয়েটের সামনে আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ। ছবি: আসাদুজ্জামান
বুয়েটের সামনে আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ। ছবি: আসাদুজ্জামান

এ সময় আবরারের চাচা বলেন, ‘এই ঘটনায় কোনো নেতার ইন্ধন রয়েছে। কেননা দু–একজন নয়, সেখানে ১৫ জনের বেশি ছেলে এই হত্যায় অংশ নিয়েছে। পরিকল্পনা ছাড়া ১০–১৫ জন ব্যক্তি কাউকে মারতে পারে না। হাইকমান্ডের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে।’

সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে এই গ্রামে আবরারের তৃতীয় জানাজা হবে। এরপর দুপুরে গ্রামের কবরস্থানে লাশ দাফন করা হবে।

এর আগে আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে আবরারের মরদেহ কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখানে সকাল সাড়ে ছয়টায় আবরারের দ্বিতীয় জানাজা হয়।

আবরার ফাহাদ। ছবি: সংগৃহীত
আবরার ফাহাদ। ছবি: সংগৃহীত

গত রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, ওই রাতেই হলটির ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁর মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।