আবরারের দাফন সম্পন্ন

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের দাফন আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সম্পন্ন হয়েছে। সকাল ১০টায় পৈতৃক ভিটা রায়ডাঙ্গা গ্রামের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে আবরারের তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক অংশ নিয়েছেন। চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে পুরো ঈদগাহ ময়দান ভরে যায়।

জানাজায় অংশ নেওয়া মানুষের কাছে আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্‌ তাঁর সন্তানের জন্য ক্ষমা চান। উপস্থিত জনতা তাঁর সন্তান শহীদ হয়েছে বলে আখ্যায়িত করেন।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় আবরার ফাহাদের দাফন সম্পন্ন হয়। কুষ্টিয়া, ৮ অক্টোবর। ছবি: তৌহিদী হাসান
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় আবরার ফাহাদের দাফন সম্পন্ন হয়। কুষ্টিয়া, ৮ অক্টোবর। ছবি: তৌহিদী হাসান

জানাজা শেষ হওয়ার পর গ্রামবাসী খুনিদের বিচার দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে ঈদগাহ ময়দানের পাশে রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বার্ষিক ক্যালেন্ডারের উল্টোপিঠে বিভিন্ন রং দিয়ে স্লোগান লিখেছেন তাঁরা। ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় খুনিদের ঠাঁই নাই/ শেখ হাসিনার বাংলায় খুনিদের ফাঁসি চাই’—এ ধরনের নানা স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে রায়ডাঙ্গা গ্রাম। দাফনের পরও গ্রামবাসী এখনো রাস্তাজুড়ে বিক্ষোভ করছেন।

রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরার ফাহাদের তৃতীয় জানাজা হয়। কুষ্টিয়া, ৮ অক্টোবর। ছবি: তৌহিদী হাসান
রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরার ফাহাদের তৃতীয় জানাজা হয়। কুষ্টিয়া, ৮ অক্টোবর। ছবি: তৌহিদী হাসান

গতকাল রাত ১০টার দিকে ঢাকায় বুয়েট প্রাঙ্গণে আবরারের প্রথম জানাজা হয়েছিল। এরপর তাঁর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স কুষ্টিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ে। আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে অ্যাম্বুলেন্সটি কুষ্টিয়ায় পৌঁছায়। সেখানে সকাল সাড়ে ছয়টায় আবরারের দ্বিতীয় জানাজা হয়।

কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদের জানাজা। ছবি: প্রথম আলো
কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদের জানাজা। ছবি: প্রথম আলো

গত রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, ওই রাতেই হলটির ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁর মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন।

আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।