আবরার হত্যার দায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের: শিক্ষক সমিতি

ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য দেন বুয়েট শিক্ষক সমিতির নেতারা। ছবি: আবদুস সালাম
ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য দেন বুয়েট শিক্ষক সমিতির নেতারা। ছবি: আবদুস সালাম

অতীতে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের ওপর ঘটে যাওয়া নির্যাতন ও র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিষ্ক্রিয় ছিল। এতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। এর ফলে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের মতো নির্মম ঘটনা ঘটেছে, যার দায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। আবরার হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষক সমিতির এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বুয়েট শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে বলা হয়, ৬ অক্টোবর রাতে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ এবং শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষের ছাত্র আবরারের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বুয়েট শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাচ্ছে।

বুয়েট শিক্ষক সমিতি বিবৃতিতে বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে কোনো শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হবেন এবং মৃত্যুবরণ করবেন, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ও আবাসিক হলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। আবরার হত্যার ঘটনা প্রমাণ করেছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।

আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিহ্নিত করে বিচারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাছে দাবি জানিয়েছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি।

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি। ছবি: আবদুস সালাম
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি। ছবি: আবদুস সালাম

বুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ কে এম মাসুদ বলেন, ‘আমরা ছাত্রদের এই আন্দোলনের সঙ্গে একমত। এটি যৌক্তিক। সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আগামীকাল সকালে শিক্ষক সমিতির বৈঠক আছে। ওই বৈঠকে অতীতে যেসব অনিয়ম হয়েছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। বৈঠকে পরবর্তী কর্মসূচি, করণীয়, পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।’

আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। তিনি থাকতেন বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলায় ১০১১ নম্বর কক্ষে। আবরারকে গত রোববার রাতে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। এ হত্যার ঘটনায় গতকাল ছাত্রলীগের ১০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।