'যে ছাত্ররাজনীতি হত্যা করে, সেই রাজনীতি চাই না'

আবরার ফাহাদ (২১) হত্যার প্রতিবাদে মৌন মিছিল বের করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষকেরা। ছবি: সাজিদ হোসেন
আবরার ফাহাদ (২১) হত্যার প্রতিবাদে মৌন মিছিল বের করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষকেরা। ছবি: সাজিদ হোসেন

আবরার ফাহাদ (২১) হত্যার প্রতিবাদে মৌন মিছিল বের করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষকেরা। আজ বুধবার সকাল ১০টায় বুয়েট ক্যাম্পাসের ভেতরেই মিছিল করেন তাঁরা।

আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। এই বিভাগের শিক্ষকেরা ‘আবরার ফাহাদের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই’ লেখা ব্যানার হাতে নিয়ে মিছিল করেন।

তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘এটা মেনে নেওয়া যায় না, আমাদের একটা সন্তান চলে গেল রাজনীতির শিকার হয়ে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখন যে ছাত্ররাজনীতি হচ্ছে, তা মানুষকে কাঁদাচ্ছে, মেরে ফেলছে। আসলে এই রাজনীতি কি শিক্ষার্থীদের কোনো উপকার হচ্ছে? বিশ্ববিদ্যালয়ে যে রাজনীতি হচ্ছে, তা শিক্ষার্থীদের কোনো উপকারে আসছে না। যে ছাত্ররাজনীতি মানুষ হত্যা করে, সেই রাজনীতি আমরা চাই না।’ তিনি মনে করেন, বুয়েটে যে ছাত্র রাজনীতি চলছে, তা না থাকাই ভালো। তা বন্ধের ব্যাপারে এখনই উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

মিছিলের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে বুয়েট মাঠে অবস্থান নেন শিক্ষকেরা। এখনো তাঁরা সেখানেই অবস্থান করছেন।

আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত বুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুব একটা চোখে পড়েনি। ক্যাম্পাসে ধীরে ধীরে লোকজন জড়ো হচ্ছে। কিছুক্ষণ পরে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।

আবরার ফাহাদ (২১) হত্যার প্রতিবাদে মৌন মিছিল বের করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষকেরা। ছবি: সাজিদ হোসেন
আবরার ফাহাদ (২১) হত্যার প্রতিবাদে মৌন মিছিল বের করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষকেরা। ছবি: সাজিদ হোসেন

গত সোম ও মঙ্গলবার আবরার হত্যার প্রতিবাদে দিনভরই উত্তপ্ত ছিল বুয়েট ক্যাম্পাস। গতকাল মঙ্গলবার দাবির মুখে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাইফুল ইসলাম তাঁর কার্যালয় থেকে বেরিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হন। শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে তিনি একমত পোষণ করেন।

গত রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, ওই রাতেই হলটির ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁর মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গতকাল সোমবার ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমপি।