ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা সফল হবে না: তথ্যমন্ত্রী

সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে টেলিভিশন শিল্পী, কলাকুশলী, নাট্যকার, অনুষ্ঠান নির্মাতাদের সম্মিলিত সংগঠন এফটিপিওর (ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশনস) সঙ্গে মতবিনিময় করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ঢাকা, ৯ অক্টোবর। ছবি: তথ্যমন্ত্রীর দপ্তরের সৌজন্যে
সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে টেলিভিশন শিল্পী, কলাকুশলী, নাট্যকার, অনুষ্ঠান নির্মাতাদের সম্মিলিত সংগঠন এফটিপিওর (ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশনস) সঙ্গে মতবিনিময় করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ঢাকা, ৯ অক্টোবর। ছবি: তথ্যমন্ত্রীর দপ্তরের সৌজন্যে

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যাকাণ্ডে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। একই সঙ্গে এ মর্মান্তিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তথ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সচিবালয়ে বুধবার দুপুরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে টেলিভিশন শিল্পী, কলাকুশলী, নাট্যকার, অনুষ্ঠান নির্মাতাদের সম্মিলিত সংগঠন এফটিপিওর (ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশনস) সঙ্গে মতবিনিময় শেষে মন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘প্রথমত এ হত্যাকাণ্ড প্রচণ্ড ন্যক্কারজনক, অনভিপ্রেত। আমরা প্রথম থেকেই এটির তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় শুরুতেই কেউ দাবি তোলার আগেই সন্দেহভাজন সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং যারা এই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হবে, তারা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়, সে জন্য সরকার বদ্ধপরিকর।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে অবশ্যই ভিন্নমত থাকবে, ভিন্নমত ছাড়া একটি গণতান্ত্রিক সমাজ হতে পারে না। ভিন্নমত থাকবে, সমালোচনাও থাকবে। সমালোচনার জবাব সমালোচনার মাধ্যমে হয়। ভিন্নমতের জবাব নিজের মতপ্রকাশের মাধ্যমে হয়। ভিন্নমতের জবাব কোনোভাবেই আক্রমণ করে হতে পারে না। এটি আমাদের সরকার সমর্থন করে না, আমাদের দলও সমর্থন করে না। এ জন্য এর সঙ্গে প্রাথমিকভাবে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, এরই মধ্যে ছাত্রলীগ তাদের বহিষ্কার করেছে এবং তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়, সে জন্য সরকার বদ্ধপরিকর।’

হত্যাকাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানোর বিষয়ে সাংবাদিকেরা মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি দেশে কোনো ঘটনা ঘটলে একটি মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করে। এখনো সেই চেষ্টা হচ্ছে। কেউ এই ঘটনাকে পুঁজি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করবে, সেটি হতে দেওয়া যাবে না।’

তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান, সচিব আবদুল মালেক, অতিরিক্ত সচিব নূরুল করিম ও এফটিপিওর আহ্বায়ক মামুনুর রশীদসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সরাতে হবে অবৈধ ডিটিএইচ সংযোগ
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সব অবৈধ ডিটিএইচ সংযোগ সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যথায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

টেলিভিশন শিল্পী, কলাকুশলী, নাট্যকার, অনুষ্ঠান নির্মাতাদের সম্মিলিত সংগঠন এফটিপিওর সঙ্গে মতবিনিময় শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্ত জানান। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির ডিটিএইচ অবৈধভাবে ব্যবহার করা হয়। বিদেশি কোনো ডিটিএইচ কোম্পানিকে এখানে ডিটিএইচ যন্ত্র বসিয়ে সম্প্রচারের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। সুতরাং বিদেশি যেসব ডিটিএইচ যারা ব্যবহার করছে বা যাদের মাধ্যমে ব্যবহার করছে, পুরোটাই অবৈধ।

হাছান মাহমুদ বলেন, অবৈধ ডিটিএইচের কারণে এভাবে দেশের ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকার বেশি বিদেশে পাচার হয়। তিনি জানান, ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হচ্ছে। সব অবৈধ বিদেশি ডিটিএইচ যন্ত্র ব্যবহার এর মধ্যে সরিয়ে নিতে হবে। এরপর মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।

এফটিপিও আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ সভায় বাংলায় ডাবিং করা বিদেশি সিরিয়াল অনুমোদনের জন্য একটি কমিটি গঠন ও এ ধরনের সিরিয়াল অফ-পিক আওয়ারে সম্প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর জোর দেন।

এফটিপিও প্রতিনিধিদের মধ্যে ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দিন লাভলু, সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক, অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি শহিদুজ্জামান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব নাসিম, টেলিভিশন নাট্যকার সংঘের সভাপতি মাসুম রেজা, সাধারণ সম্পাদক এজাজ মুন্না এবং টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুনতাসির মামুন সাজু মতবিনিময়ে অংশ নেন।