দেশের ছেলেদের পশুতে পরিণত করা হচ্ছে: ড. কামাল

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন। ছবি: আশরাফুল আলম
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন। ছবি: আশরাফুল আলম

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, দেশের ছেলেদের পশুতে পরিণত করা হচ্ছে। তিনি আবরার হত্যার বিচারে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি করার দাবি জানান।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আবরার হত্যার বিচারের দাবিতে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন।

আবরারকে যাঁরা পিটিয়ে হত্যা করেছেন, তাঁদের প্রসঙ্গ টেনে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘এদের ছেলে বলব না। এরা জানোয়ার। নিরীহ লোককে এরা পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। আমরা দেশের ছেলেদের পশুতে পরিণত করছি। এটা ভয়াবহ। দেশকে এই অবস্থা থেকে মুক্ত করতে হবে।’

গণফোরাম সভাপতি বলেন, ‘যারা রুগ্ণ, তারাই এগুলো করতে পারে। গুরুতরভাবে রুগ্ণ। একটা ছেলে নিজের মত প্রকাশ করেছে, তাকে এভাবে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হলো। এটা আমাদের সভ্যতার, স্বাধীনতা অর্জনের ও সংবিধানের ওপর আঘাত।’

সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘সংবিধানে পরিষ্কার বলা আছে, আমাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে। আমার সঙ্গে একমত না হলে তাকে পিটিয়ে মারা সংবিধান ও রাষ্ট্রবিরোধী।’

আবরারর হত্যার ঘটনায় নামকাওয়াস্তে যেনতেন তদন্ত কমিটি না করে উচ্চপর্যায়ের অভিজ্ঞ ও নীতিমান ব্যক্তিদের নিয়ে তদন্ত কমিটির করার দাবি জানান ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, পরাধীন আমলে যেসব ঘটনা ঘটেছে, স্বাধীন দেশে তা ঘটবে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এই ধরনের সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে।

ছাত্ররাজনীতি বন্ধ প্রসঙ্গে কামাল হোসেন বলেন, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি তিনি কোনো দিন চাননি। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির পরিণতি দেখা যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী। তিনি আবরার হত্যার নিন্দা জানিয়ে বলেন, আবরার অপরাজনীতির বলি। মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। অস্থিরতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং রুগ্ণ ও অসুস্থ রাজনীতি চলছে।

দেশকে এই অবস্থা থেকে মুক্ত করতে এবং গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানায় গণফোরাম।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ, সাংসদ মোকাব্বির খান প্রমুখ।