মাছের ঝাঁপিতে পাখি, আটক ১

মাছের ঝাঁপিতে করে পাখি বিক্রির সময় হাতেনাতে আটক হন মাহতাব হোসেন নামের এক ব্যক্তি। সিলেট সদর, ১০ অক্টোবর। ছবি: প্রথম আলো
মাছের ঝাঁপিতে করে পাখি বিক্রির সময় হাতেনাতে আটক হন মাহতাব হোসেন নামের এক ব্যক্তি। সিলেট সদর, ১০ অক্টোবর। ছবি: প্রথম আলো

সিলেট নগরের জিন্দাবাজার এলাকায় মাছের ঝাঁপিতে করে পাখি বিক্রির সময় এক ব্যক্তি আটক হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরের জিন্দাবাজারের ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটির সামনে এ ঘটনা ঘটে।

পরিবেশবাদী সংগঠনের কয়েকজন সদস্য ওই ব্যক্তিকে আটক করেন। পরে বন বিভাগের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন বাস্তবায়নকারীদের কাছে সোপর্দ করেন।

সিলেটের স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ভূমিসন্তান বাংলাদেশ’-এর সদস্য শাকিল আহমদ বলেন, আজ বিকেল চারটার দিকে চার থেকে পাঁচজনকে মাছের ঝাঁপি নিয়ে ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটির সামনে অবস্থান করতে দেখেন। এ সময় ঝাঁপিতে ‘কী মাছ’ জানতে চাওয়া হলেও তাঁরা উত্তর দেননি। একপর্যায়ে মুঠোফোনে ক্রেতাদের ডেকে ঝাঁপি থেকে ১০টি বালিহাঁস জবাই করা হয়। এ সময় বিষয়টি ধরা পড়ে।

শাকিল বলেন, ঘটনাটি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরীকে জানানো হয়। এরপর তিনি বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে খবর দেন। একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে বন বিভাগের একটি দল মাছের ঝাঁপি থেকে ২০টি ঘুঘু ও ১২টি বালিহাঁস উদ্ধার করে। অভিযানের সময় ঝাঁপি ফেলে কয়েকজন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে তাঁদের মধ্যে মাহতাব হোসেন নামের একজনকে আটক করা সম্ভব হয়েছে।

মাহতাবের বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ গ্রামে। তিনি বলেন, হাকালুকি হাওর এলাকা থেকে এসব পাখি শিকার করা হয়েছে। ধরপাকড় এড়াতে তাঁর সঙ্গীরা মাছের ঝাঁপিতে পাখি নেওয়ার কৌশল বের করেছেন।

বন বিভাগ জানায়, প্রকাশ্যে কেনাবেচা কমলেও ভোজনবিলাসীদের চাহিদার কারণে আড়ালে পাখি কেনাবেচা ঠিকই চলে। ফেরি করে নানা রকম পণ্যসামগ্রী বিক্রির কৌশলে এখন পাখিও বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের ঝাঁপিতে করে এভাবে পাখি কেনাবেচার ঘটনাটি এবারই প্রথম ধরা পড়ল।

বন বিভাগের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন বাস্তবায়নকারী দলের সদস্য সিলেটের টাউন রেঞ্জ কর্মকর্তা হাসমত আলী বলেন, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২-এর ধারা ৩৮ অনুযায়ী পাখি শিকার, হত্যা, ক্রয়-বিক্রয়, আটক রাখা ইত্যাদি দণ্ডনীয় অপরাধ। আটক মাহতাবের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আবদুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা তাৎক্ষণিকভাবে খোঁজ নিয়ে দেখেছি, বিপণিবিতানকেন্দ্রিক একশ্রেণির মানুষ মুঠোফোনের মাধ্যমে পাখিশিকারিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং চাহিদা অনুযায়ী কিনছেন। বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ক্রেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।’