ফানুস উড়িয়ে শুরু প্রবারণা উৎসব

ফানুস ওড়ানোর মধ্য দিয়ে বান্দরবানে আজ থেকে তিন দিনব্যাপী মহাওয়াগ্যোয়াই পোয়ে বা প্রবারণা উৎসব শুরু হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো
ফানুস ওড়ানোর মধ্য দিয়ে বান্দরবানে আজ থেকে তিন দিনব্যাপী মহাওয়াগ্যোয়াই পোয়ে বা প্রবারণা উৎসব শুরু হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো

বান্দরবানে বৌদ্ধধর্মাবলম্বী মারমাদের মঙ্গলরথ উদ্বোধন ও ফানুস ওড়ানোর মধ্য দিয়ে আজ শনিবার থেকে তিন দিনব্যাপী মহাওয়াগ্যোয়াই পোয়ে বা প্রবারণা উৎসব শুরু হয়েছে। বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমা সন্ধ্যায় মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে জেলা শহরের রাজার মাঠে মঙ্গলরথ উদ্বোধন করেন।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট (কেএসআই) ও ওয়াগ্যোয়াই উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঙ্গলরথ উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে শত শত ফানুস ওড়ানো হয়। আতশবাজি ও উড়ন্ত ফানুসে রঙিন হয়ে ওঠে রাতের আকাশ। পরে মারমা শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীদের আয়োজনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।

ওয়াগ্যোয়াই উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী কাল রোববার মূল প্রবারণা বা ওয়াগ্যোয়াই। বিহারে বিহারে প্রার্থনা, পঞ্চশীল গ্রহণসহ বিভিন্ন ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা হবে। সন্ধ্যায় মঙ্গলরথ খ্যাংওয়া কিয়ং (রাজবিহার) ও উজানিপাড়া বিহারে নিয়ে যাওয়া হবে। রাতে জাদিপাড়ায় পিঠা তৈরি উৎসব হওয়ার কথা রয়েছে। আগামী সোমবার মঙ্গলরথ পুণ্যার্থীদের মাঙ্গলিক পূজার জন্য জেলা শহরের বিভিন্ন সড়কে ঘুরে বেড়াবে। রাতে পূজা শেষে নির্বাণ লাভ করা উপগুপ্তের উদ্দেশে শঙ্খ নদে মঙ্গলরথ বিসর্জন দেওয়া হবে। উপজেলা শহর, পাড়া ও গ্রামে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে উৎসব শুরু হয়েছে।

বৌদ্ধ ভিক্ষুরা আষাঢ় মাসের পূর্ণিমার দিন থেকে আশ্বিনের পূর্ণিমা পর্যন্ত বর্ষাবাস (একটি নির্দিষ্ট বৌদ্ধবিহার থেকে বর্ষাকাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কোথাও না যাওয়াই বর্ষাবাস) করেন। বর্ষাবাস শেষ হওয়া আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে প্রবারণা বা মারমা ভাষায় ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে বলা হয়।

বৌদ্ধধর্মাবলম্বী মারমারা বৈশাখী পূর্ণিমা বা বুদ্ধপূর্ণিমার চেয়েও ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে বা প্রবারণা উৎসবকে বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদ্‌যাপন করেন। এ সময় মারমা, ম্রো, চাকমা, খেয়াং, চাকসহ পাহাড়ি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী এবং বাঙালি হাজারো নারী-পুরুষের উপস্থিতিতে জাতিগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যের মিলন উৎসবে পরিণত হয়ে থাকে।