দেশে কি সংবিধান বিলুপ্ত, প্রশ্ন আমীর খসরুর

নাসিমন ভবন চত্বরে নগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। চট্টগ্রাম, ১২ অক্টোবর। ছবি: সৌরভ দাশ
নাসিমন ভবন চত্বরে নগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। চট্টগ্রাম, ১২ অক্টোবর। ছবি: সৌরভ দাশ

দেশে সংবিধান বিলুপ্ত হয়ে গেছে কি না, প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার হচ্ছে প্রতিবাদের ভাষা। বাংলাদেশের সংবিধান তা দিয়েছে। সেই ভাষা প্রকাশ করতে আজ বাধা দেওয়া হচ্ছে।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভারতের সঙ্গে করা সাম্প্রতিক চুক্তি বাতিল ও বুয়েটের ছাত্র আবরার হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগর বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে আমীর খসরু এসব কথা বলেন। আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবন চত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন নগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু সুফিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম।

সমাবেশে আমীর খসরু বলেন, দেশের বিরুদ্ধে মানুষ কোনো চুক্তি চায় না। তারা দেশের মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বুয়েটের ছাত্র আবরার খুনের ঘটনায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। এই প্রতিবাদের জোয়ার কোনো শক্তি দিয়ে থামিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।

আমীর খসরু বলেন, ‘আবরার ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী যে চুক্তি হয়েছে, তার প্রতিবাদ করেছে সে। এ জন্য তাকে জীবন দিতে হয়েছে।’ তিনি প্রশ্ন করেন, এই সন্ত্রাসীরা কারা? এদের কে মদদ দিচ্ছে? তাদের উদ্দেশ্য কী? এরা কি দেশবিরোধী কাজ করছে না? দেশপ্রেমিক নাগরিককে যারা পোস্ট দেওয়ার জন্য হত্যা করে, তারা কি দেশদ্রোহী নয়?

আমীর খসরু বলেন, আবরার যে পোস্ট দিয়েছিল, সেটা ফেসবুকে সবাইকে রি-পোস্ট করতে হবে। এই পোস্টকে অবিস্মরণীয় করে তুলতে হবে। এই পোস্ট আগামী দিনে বাংলাদেশের মুক্তির স্লোগান হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, ‘আবরারকে যারা হত্যা করেছে, তাদের কী হবে, আমরা জানি। ক্যাসিনো ডাকাতদের কী হবে, আমরা জানি। ব্যাংক ডাকাতদের কী হয়েছে, আমরা জানি। সুতরাং এদের কী হবে, সেটাও বাংলাদেশের মানুষের জানা আছে। আজ দেশবিরোধী যে চুক্তি হয়েছে, সেই চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।’

ভারতের সঙ্গে চুক্তি প্রসঙ্গে আমীর খসরুর প্রশ্ন, কাকে বোকা বানাচ্ছে সরকার? তিনি বলেন, ‘সীমান্তে খুন চিরতরে বন্ধ করতে এবং রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ভারতের কী সিদ্ধান্ত, সেটাও যৌথ বিবৃতিতে আসেনি। আমাদের সঙ্গে ব্যবসায় যে ভারতের বড় ধরনের ডেফিসিট (ঘাটতি) আছে, সেটাও আসেনি। বাংলাদেশের স্বার্থ, তিস্তা নদীসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন কিছুই যৌথ বিবৃতিতে নেই। শুধু এসেছে ভারত যা যা পেয়েছে, ফেনী নদী থেকে শুরু করে এলপিজি গ্যাস, বন্দর ব্যবহার ইত্যাদি।’

চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন একের পর এক কথিত নাটক মঞ্চস্থ করার অভিযোগ তুলে সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে হোতাদের স্বীকারোক্তিতে অনেক বড় নেতার নাম এসেছে। নেতাদের নাম ধামাচাপা দিতে বাংলাদেশে আরও একটি নাটক মঞ্চস্থ হলো। সেটি হচ্ছে, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের একটি স্ট্যাটাস। সেটিতে কী ছিল? সেটিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বিরুদ্ধে কোনো কথা ছিল না। সেটিতে ছিল আমাদের দেশের পক্ষে আবরারের কথা। এটা কি তার অপরাধ? এ জন্য কি তাকে মেরে ফেলা হবে? ছাত্রলীগকে এই লাইসেন্স দিচ্ছে কে? বাংলাদেশের মানুষ তা জানতে চায়। এখানেই হচ্ছে নাটক।