ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার সম্রাট, দাবি মায়ের

ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটের পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: প্রথম আলো
ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটের পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটের মা সায়েদা চৌধুরী বলেছেন, তাঁর ছেলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়েছেন। আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সম্রাটের মা। রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

সম্রাটের মা বলেছেন, তাঁর ছেলে অসুস্থ। সম্রাটের সুচিকিৎসার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ ছাড়া ‘কোনো ভুলত্রুটি থাকলে’ তা ক্ষমা করে দিতেও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের ‘জীবন রক্ষা, উন্নত চিকিৎসা ও দ্রুত মুক্তির দাবিতে’ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্রাট কার আক্রোশের শিকার? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে সম্রাটের ভাই রাশেদ চৌধুরী বলেন, যখনই সম্রাট নির্বাচন করার প্রস্তুতি নেন, তখনই তাঁর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ওঠে।

গত সেপ্টেম্বর মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘ক্যাসিনোবিরোধী’ অভিযান শুরু হলে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের নামটি আলোচিত হয়। তাঁকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়। গত রোববার (৬ অক্টোবর) ভোররাতে যুবলীগ নেতা সম্রাট ও তাঁর সহযোগী এনামুল হককে কুমিল্লা থেকে আটক করে র‍্যাব। সম্রাটের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত রোববার দুপুরে তাঁর কার্যালয় কাকরাইলের ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে অভিযান চালান। সেখান থেকে পিস্তল, গুলি, ইয়াবা বড়ি, বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ক্যাঙারুর দুটি চামড়া, বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার দুটি যন্ত্র ও লাঠি উদ্ধার করা হয়।

সম্রাটকে গ্রেপ্তারের পর পরিবারের পক্ষ থেকে আজকের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্রথম কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হলো। সংবাদ সম্মেলনে সম্রাটের মা সায়েদা চৌধুরীর পক্ষে লিখিত বক্তব্যটি পড়েন সম্রাটের বোন ফারহানা আক্তার চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে সম্রাটের মা বলেন, ‘গত ৬ অক্টোবর আমার সন্তানকে গ্রেপ্তার করা হয়। যে স্থান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়, সে স্থান থেকে কোনো প্রকার অস্ত্র কিংবা মাদক পাওয়া যায় নাই।’

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে দেখতে পেলাম সম্রাটকে কাকরাইল অফিসে নিয়ে আসা হয় এবং প্রায় ৪ ঘণ্টা ১৭ মিনিট তাঁর অফিস তল্লাশি করা হয়। তল্লাশি চলার সময় কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। সম্রাটকে নিয়ে অফিসের ভেতরে প্রবেশের সময় বিভিন্ন মিডিয়ার সম্প্রচারে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু লোক কাঁধে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করে। অফিস থেকে বের হওয়ার সময় ওই সব ব্যাগ দেখা যায়নি।’

সায়েদা চৌধুরী আরও বলেন, ‘শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এবং ব্যক্তিগত আক্রোশে সম্রাটকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জড়ানো হচ্ছে।’

সায়েদা চৌধুরী বলেন, তাঁর ছেলে ক্যাসিনোর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সম্রাট শেখ হাসিনার পরীক্ষিত সৈনিক, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লোক। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে তিনি সামনের সারিতে ছিলেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ রাজধানীর সব সমাবেশ সফল করতে সম্রাট সব সময় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন।