ঝিনাইদহে বিএনপির ২ প্রার্থীর ভোট বর্জন

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুপুরের আগেই ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির দুই প্রার্থী। ছবিতে কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছেন। ছবি: প্রথম আলো
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুপুরের আগেই ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির দুই প্রার্থী। ছবিতে কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছেন। ছবি: প্রথম আলো

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট বর্জন করলেন বিএনপির দুই প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক ও শাহজাহান মোহন।

আজ সোমবার বেলা পৌনে একটায় কোটচাঁদপুর উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আবদুর রাজ্জাক ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। বেলা একটার পর মহেশপুর শহরের ট’বাজারের নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন মহেশপুরের ধানের শীষের প্রার্থী শাহজাহান মোহন।

উভয় প্রার্থী নির্বাচনের পরিবেশ না থাকা, বাইরের উপজেলা থেকে সন্ত্রাসী এনে স্থানীয় ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া, পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ না করতে দেওয়ার অভিযোগ করেন। এ ছাড়া এক প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্টকে ভোটের আগের দিন মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানোসহ নানা অভিযোগও করেন। তাঁরা দাবি করেন, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া, পাড়ায় পাড়ায় ত্রাস সৃষ্ট করা, রাস্তা থেকে ভোটারদের ফেরত পাঠানো, কেন্দ্রে ধানের শীষের পক্ষের পোলিং এজেন্ট না থাকাসহ নানা অনিয়ম ধরা পড়ে তাঁদের চোখে। এ বিষয়গুলো প্রশাসনের নজরে আনলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে তাঁরা বুঝে নিয়েছেন, নির্বাচনে থাকার আর কোনো পরিবেশ নেই। তাই তাঁরা ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

ধানের শীষের প্রার্থী কোটচাঁদপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে সরকারি দলের পক্ষ থেকে এলাকায় নানাভাবে ত্রাস সৃষ্টি করা হচ্ছিল। কিন্তু তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আশ্বাসে ভোটের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসন তাঁদের কোনো কথা রাখেনি। ভোটের নামে প্রহসন করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।

মহেশপুর উপজেলার প্রার্থী জেলা বিএনপির সদস্য শাহজাহান মোহন দাবি করেন, গোটা উপজেলার আটটি ইউনিয়নের কোনো কেন্দ্রেই তাঁর পোলিং এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় ভোটের মাঠে থাকার কোনো সুযোগ নেই। তাই তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আমিরুল আলম খানসহ পৃথক সম্মেলনে দুই উপজেলার স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ সাংবাদিকদের বলেন, কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক তাঁর কাছে মৌখিকভাবে কয়েকটি অভিযোগ করেছেন। তিনি নির্দিষ্টভাবে অভিযোগ জানাতে বলেন। কিন্তু পরে তিনি আর যোগাযোগ করেননি। তবে ভোট বর্জনের বিষয়ে তাঁকে কেউ অবহিত করেনি বলে জানান।

আজ ঝিনাইদহের দুটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ভোট গ্রহণ চলছে। নির্বাচনে উপজেলা দুটিতে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মহেশপুর উপজেলার ১১৩টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ২ লাখ ৫২ হাজার ৯১ জন ও কোটচাঁদপুর উপজেলার ৫৩টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ১ লাখ ৮ হাজার ৮৮২ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে আশা করছে প্রশাসন। নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১০ প্লাটুন বিজিবি, ৯৬১ জন পুলিশ, ১ হাজার ৭২৭ জন আনসার সদস্যসহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের টহল অব্যাহত রয়েছে।