ওয়ার্ড কাউন্সিল নিয়ে আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১

রাজবাড়ী
রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সন্ধ্যার এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

নিহত ব্যক্তির নাম রেজাউল করিম মোল্লা ওরফে আবু ডাক্তার (৩৭)। তিনি দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামের মোবারক মোল্লার ছেলে। আহত ব্যক্তিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ফরিদপুরে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেবগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নবনির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম ও সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আতর আলী সরদারের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত রেজাউল করিম হাফিজুল চেয়ারম্যানের মেয়ের দেবর। তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকলেও কাউন্সিল দেখতে গিয়ে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে হামলার শিকার হন।

কাউন্সিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ফজলুল হক জানান, সোমবার বিকেলে দেবগ্রাম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল স্থানীয় দেবগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছিল। প্রথম অধিবেশন শেষে শুরু হয় কাউন্সিলরদের ভোট গ্রহণ পর্ব। এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুল ইসলামের ছেলে বকুল ও আতর আলী সরদারের ছেলে ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সিরাজুল ইসলামের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জেরে পরবর্তী সময়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোট শেষে হাফিজুল চেয়ারম্যান ও আতর আলীর সমর্থকদের মধ্যে বাজারে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় হাফিজুলের সমর্থকেরা আতর চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। হামলার খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্থানীয় লোকজন।

আতর আলীর ছেলে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম চিকিৎসাধীন অবস্থায় বলেন, কাউন্সিল স্থলে হাফিজুল চেয়ারম্যান সন্ত্রাসীদের জড়ো করে কাউন্সিলকে প্রভাবিত করছিলেন। এর প্রতিবাদ করায় তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। তাঁদের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘ওরা (আতর আলীর সমর্থক) আমার মেয়ের দেবর আবু ডাক্তারকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে।’

হাফিজুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হলেও যুবলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম সেখানে জোরপূর্বক অবস্থান করে কাউন্সিলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছিল। এ নিয়ে সামান্য বাগ্‌বিতণ্ডা হলেও পরবর্তী সময়ে ওরা দলবল নিয়ে আমার লোকজনের ওপর হামলা চালায়।’

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘হামলার ঘটনা শুনে আমরা অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। এরপর পরিস্থিতি শান্ত করি। বর্তমানে গোটা এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’