চট্টগ্রামে শতাধিক নেতা-কর্মী আত্মগোপনে, বন্দুকযুদ্ধের পর আতঙ্ক

ক্যাসিনো ।  প্রতীকী ছবি
ক্যাসিনো । প্রতীকী ছবি

রাজধানীতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পরই চট্টগ্রামে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে র‍্যাবের তালিকাভুক্ত ২০-২২ জন রয়েছেন। রোববার রাতে যুবলীগের এক কর্মী র‍্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হলে সরকার-সমর্থক নেতা-কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক আরও ছড়িয়ে পড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মহিউদ্দিনের কোনো হদিস নেই। ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল আলম ওরফে লিমন, নন্দনকানন এলাকার মো. আবু জাফর, সিআরবি এলাকার রিটু দাশ ওরফে বাবলু, জিইসি ভূঁইয়া গলির মশিউর রহমান ওরফে দিদার, নালাপাড়ার জহির উদ্দিন ওরফে বাবর, জামালখান এলাকার আবদুর রউফ এবং চান্দগাঁও এলাকার এছরারুল হককে কয়েক দিন ধরে দেখা যাচ্ছে না।

আত্মগোপনে যাওয়া নেতা-কর্মীর সংখ্যা শতাধিক হবে বলে মনে করেন চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল হক। তিনি বলেন, পাড়া-মহল্লায় ডজনে ডজনে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ পাওয়া যাবে, যাঁরা টেন্ডার ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। এখন সংগঠনকে জঞ্জালমুক্ত করার সময় এসেছে। এটা কাজে লাগাতে হবে।

গত রোববার রাতে র‍্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে যুবলীগ কর্মী খোরশেদ আহমেদ নিহত হলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের মধ্যে আতঙ্ক আরও ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির সঙ্গে জড়িত নেতা-কর্মীরা গা ঢাকা দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এই দুই শ্রেণির অপরাধীদের একটি তালিকাও র‍্যাব তৈরি করেছে।

তালিকা তৈরির কথা নিশ্চিত করে র‍্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরে ২০-২২ জনের একটি তালিকা তৈরি হয়েছে। চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আমরা খুঁজছি।’ মাহবুবুল আলম আরও বলেন, এ ছাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলররা কোথায় কী করছেন, সব তথ্য আমরা সংগ্রহ করেছি। তাঁদেরও পর্যায়ক্রমে আমরা আইনের আওতায় আনব।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীতে অভিযান শুরুর দুই-আড়াই মাস আগেই দেশ ছাড়েন যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী ওরফে বাবর। নগরের নন্দনকানন এলাকায় তাঁর বাসা। যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা সবাই জানে। তাঁর বিরুদ্ধে রেলওয়ের দরপত্র নিয়ন্ত্রণে রাখার অভিযোগ রয়েছে। দরপত্র নিয়ে বিরোধের জের ধরে ২০১৩ সালের ২৪ জুন চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকায় যে জোড়া খুন হয়, সেই মামলার আসামি বাবর। বাবরের সহযোগী মো. আবু জাফর ও রিটু দাশ ওরফে বাবলুও সম্প্রতি গা ঢাকা দিয়েছেন। রেলের টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণে এই দুজনেরও হাত রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ।

২০১৩ সালে সিআরবি এলাকায় বন্দুকযুদ্ধে জোড়া খুনের ঘটনায় বাবরের প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল আলম ওরফে লিমনকে কয়েক দিন ধরে চট্টগ্রাম রেলওয়ে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। তিনি জোড়া খুনের মামলার আসামি। চান্দগাঁও এলাকার যুবলীগ কর্মী এছরারুল হক সপ্তাহ দুয়েক আগে গা ঢাকা দেন। কয়েক মাস আগে বিরোধের জের ধরে স্থানীয় এক যুবকের শরীর ড্রিল করে আলোচনায় আসেন তিনি।