চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধে আবার ভাঙন

আবারও চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার হরিসভা এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধে মেঘনা নদীর তীব্র স্রোতে প্রায় ৪০ মিটার এলাকা নদীতে দেবে গেছে। চরম ঝুঁকিতে রয়েছে পুরো হরিসভা এলাকাসহ পুরানবাজার এলাকা। ভাঙন-আতঙ্কে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষজন রাতের মধ্যেই তাঁদের বসতঘর ও আসবাব সরিয়ে নেওয়া শুরু করেন।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার হরিসভা এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধে মেঘনা নদীর তীব্র স্রোতে প্রায় ৪০ মিটার এলাকা নদীতে দেবে গেছে। ভাঙন রোধে বালির বস্তা ফেলা হয়েছে। ছবি: আলম পলাশ
গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার হরিসভা এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধে মেঘনা নদীর তীব্র স্রোতে প্রায় ৪০ মিটার এলাকা নদীতে দেবে গেছে। ভাঙন রোধে বালির বস্তা ফেলা হয়েছে। ছবি: আলম পলাশ

গত আগস্টে ঠিক একই জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছিল।

আজ মঙ্গলবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। অন্যদিকে ভাঙনের ভয়ে লোকজন তাদের ঘরবাড়ি আসবাবপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। হরিসভা এলাকার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন জানান, সন্ধ্যার পর থেকে ভাঙন দেখা দেওয়ায় তাঁরা তাঁদের ঘরের আসবাব সরিয়ে পাশের রাস্তায় ও মাঠে ঠাঁই নিয়েছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে আছেন। সরকারিভাবে তাঁদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী ব্যবস্থা না নেওয়ায় সেখানে ভাঙন-আতঙ্ক কমেনি, বরং বাড়ছে।

চাঁদপুরে ভাঙন-আতঙ্কে নদী তীরবর্তী বাড়ি ভাঙনের মুখে। আজ মঙ্গলবার সকালে তোলা। ছবি: আলম পলাশ
চাঁদপুরে ভাঙন-আতঙ্কে নদী তীরবর্তী বাড়ি ভাঙনের মুখে। আজ মঙ্গলবার সকালে তোলা। ছবি: আলম পলাশ

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর সংরক্ষণ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আশ্রাফ উজ্জামান খান বলেন, ‘গত আগস্ট মাসেও এই এলাকায় মেঘনার ভাঙন দেখা দেয়। এতে করে শহর রক্ষা বাঁধের বেশ কিছু ব্লক দেবে গিয়ে কিছু ক্ষতি হয়েছিল। তবে আমরা রাত থেকে আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত ভাঙন রোধে প্রায় ৫০০ বালির বস্তা ফেলেছি। এর ফলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কাও আপাতত নেই।’

আশ্রাফ উজ্জামান খান বলেন, গত ৩ আগস্ট রাতেও এভাবে এই এলাকার হরিসভা মন্দির কমপ্লেক্সের সামনে ভাঙন শুরু হলে মুহূর্তে প্রায় সাড়ে ৪০০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তখন স্থানীয় সাংসদ দীপু মনির নির্দেশে প্রায় ২০০ মিটার এলাকায় তাৎক্ষণিক বালির বস্তা ফেলা হয়।

ভাঙনের খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান, পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান, পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান বলেন, ‘সোমবার রাতে দ্বিতীয়বারের মতো ভাঙন দেখা দিলে আমরা তাৎক্ষণিক ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিই। এ ছাড়া পুলিশ দিয়ে সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করেছি। এর ফলে আপাতত ভাঙন বন্ধ রয়েছে। এতে আতঙ্কের কিছু নেই। তবে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর সঙ্গে রাতে কথা হয়েছে। তাঁরা ভাঙনের খোঁজখবর রাখছেন।’