দুর্গাপুরে ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় কাউছার তালুকদার (১৯) নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টার দিকে পৌর শহরের পুলিশ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় ছাত্রদল নেতা মো. মেহেদি হাসান ওরফে সাহসের (২১) নেতৃত্বে ছাত্রদলের কয়েকজন হামলা চালিয়ে কাউছারকে হত্যা করেছে।

এ ঘটনায় গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতিসহ তিনজনকে আটক করেছে। তাঁরা হলেন মেহেদি হাসানের দাদা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ইমাম হাসান, ইমাম হাসানের ছেলে মো. জুলহাস ও নাতি পরশ।

কাউছার তালুকদার উপজেলার মেছুয়া বাজার এলাকার মৃত আলাল উদ্দিন তালুকদারের ছেলে। তিনি নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনের তিনবারের সাবেক সাংসদ প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা মো. জালাল উদ্দিন তালুকদারের ভাতিজা।

দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, কাউছার তালুকদার তাঁর আপন চাচাতো ভাই। কাউছার দুর্গাপুর পুলিশ মোড় এলাকায় একটি মোটরসাইকেল মেরামতের দোকান চালাতেন এবং স্থানীয় ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

কাউছার হত্যার ঘটনায় তাঁর ভাই জুয়েল তালুকদার অভিযোগ করেন, ছাত্রদল নেতা মেহেদি হাসান তাঁর দলবল নিয়ে হামলা চালিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। মেহেদি হাসানসহ কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

মেহেদি হাসান দুর্গাপুরের মাঝিয়াল গ্রামের মঞ্জুরুল হকের ছেলে। তিনি সুসং সরকারি ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক। গত ১৬ আগস্ট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের ভাষ্য, ছাত্রলীগের কর্মী কাউছার তালুকদারের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা মেহেদি হাসানের বেশ কিছু দিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে গত মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টার দিকে মেহেদি হাসানের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন যুবক কাউছারের ওপর আকস্মিক হামলা চালান। এ সময় কাউছার পুলিশ মোড় এলাকায় তাঁর নিজস্ব মোটরসাইকেল মেরামতের দোকানে বসে একটি মুঠোফোন হাতে নিয়ে দেখছিলেন। হামলাকারীরা কাউছারকে হকিস্টিক দিয়ে বেদম মারধর করে এবং রামদা দিয়ে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় পাশের দোকানিরা ও পথচারীরা বাধা দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন পরে কাউছারকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে ওই হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক কাউছারকে মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের আটকে অভিযান চলছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

কাউছার হত্যার ঘটনায় আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌর শহরে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ নানা শ্রেণি–পেশার লোকজন অংশ নেন।