জামালপুরে দুদকের অভিযানে ঘুষের টাকাসহ হাসপাতালের অফিস সহকারী গ্রেপ্তার

জামালপুরে ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ঘুষসহ এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ছবি: প্রথম আলো
জামালপুরে ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ঘুষসহ এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ছবি: প্রথম আলো

জামালপুরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের এক কর্মচারীকে ঘুষের টাকাসহ গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তারকৃত কর্মচারীর নাম কাজী গোলাম মোস্তফা (৩৫)। তিনি জামালপুর সদর উপজেলার নরুন্দি এলাকার মিরাপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২৫০ শয্যাবিষিষ্ট জামালপুর সদর হাসপাতালের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর। ঘুষ গ্রহণের ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩২ টাকাসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দুদক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ওই হাসপাতালের কর্মরত নার্সদের অভিযোগের ভিত্তিতে আজ দুপুর ১২টার দিকে দুদকের একটি দল হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনে অভিযান চালায়। ঘুষ গ্রহণের সময় হাতেনাতে কাজী গোলাম মোস্তফাকে দুদকের দল গ্রেপ্তার করে। একটি খামের ভেতর থেকে ৩৬ হাজার টাকা, তাঁর প্যান্টের পকেট থেকে ২৭ হাজার ৩২ টাকা ও তাঁর কক্ষের আলমারি থেকে ৭০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। সর্বমোট ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩২ টাকা জব্দ করা হয়। ওই কার্যালয়ের বিভিন্ন কম্পিউটার ও ফাইলপত্র দেখেন তাঁরা।

অভিযানের সময় কয়েকজন নার্স অভিযোগ করে বলেন, নার্সদের জন্য বিনোদন ভাতা আসছে। কিন্তু বিনোদন ভাতার টাকা নেওয়ার জন্য কাজী গোলাম মোস্তফা সবার কাছে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে ঘুষ চান। শুধু এই টাকাই নয়, বিভিন্ন সময় যেকোনো কাজের জন্য তাঁর কাছে এলে ঘুষ দেওয়া ছাড়া তিনি কোনো কাজ করে দিতেন না। তিনি সবার কাছ থেকেই ঘুষ নিতেন। ছুটি পাইয়ে দেওয়ার জন্য তাঁকে ঘুষ দিতে হতো। তাঁর ঘুষ গ্রহণের সবাই অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। তিনি বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়েও ঘুষ গ্রহণ করতেন। অনেকটাই অতিষ্ঠ হয়ে তাঁরা দুদকের কাছে অভিযোগ দেন।

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জামালপুর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক প্রফুল্ল কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই কর্মচারীর ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। দুদকের একটি দল আমাকে ডেকে নিয়ে ঘুষ গ্রহণের সময় গ্রেপ্তারের বিষয়টি বলেন। এর আগে হাসপাতালের কেউ বা সাধারণ মানুষ আমাকে ওই কর্মচারীর ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে কোনো অভিযোগ দেননি। তাঁর ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে আমার কিছু জানা ছিল না।’

দুদকের টাঙ্গাইল কার্যালয়ের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘নার্সদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের সময় হাতেনাতে কাজী গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে ঘুষের ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩২ টাকা পাওয়া গেছে। তিনি আমাদের নজরদারির মধ্যেই ছিলেন। তাঁর সঙ্গে এ হাসপাতালে ঘুষ গ্রহণের আরও কে কে যুক্ত রয়েছেন, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে তা বেরিয়ে আসবে। এ ঘটনায় জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হবে।’