জাবিতে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ, উপাচার্যপন্থীদের মৌন মিছিল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য ফারজানা ইসলামকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণ থেকে আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।

বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাসের কয়েকটি সড়ক, অনুষদ ভবন ও প্রশাসনিক ভবন ঘুরে মুরাদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ হয়।


এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অপসারণের আন্দোলনকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক ও ভিত্তিহীন’ দাবি করে আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে মৌন মিছিল ও সমাবেশ করেছে উপাচার্যপন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে ও উন্নয়নের পক্ষে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে প্রায় দুই মাস ধরে আন্দোলন করছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। তবে ৬ অক্টোবর থেকে গত সোমবার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় দুর্গাপূজার ছুটিতে ছিল। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দিন থেকে আবার আন্দোলন শুরু হয়েছে।

‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে সমাবেশে দর্শন বিভাগের শিক্ষক কামরুল আহসান বলেন, ‘ছাত্রলীগের যেসব নেতা গণমাধ্যমের সামনে এসে টাকা পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন, তাঁদের প্রত্যেকে এই অনিয়মের ঘটনার সাক্ষী। আন্দোলনকারীরা তদন্ত কমিটি চেয়েছিল উপাচার্যকে অপমানিত করার জন্য নয়, বরং উন্নয়ন প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য।’

দর্শন বিভাগের শিক্ষক আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘উপাচার্য ফারজানা ইসলাম দুর্নীতির সঙ্গে স্পষ্টভাবে যুক্ত। এখন নতুন করে দল ভারী করে তিনি প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন, তিনি দুর্নীতিবাজ নন।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ‘উপাচার্য ফারজানা ইসলাম স্বৈরাচারের এমন সব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, যা আগের সব সীমা লঙ্ঘন করেছে। যারা টাকা পেয়েছে, তারা বলেছে, “আমরা টাকা পেয়েছি।” কিন্তু উপাচার্য বারবার মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন।’

উপাচার্যপন্থীদের মৌন মিছিল ও সমাবেশ
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারসংলগ্ন সড়ক থেকে ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং উন্নয়নের পক্ষে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে উপাচার্যপন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে একটি মৌন মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন তাঁরা।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অজিত কুমার মজুমদার বলেন, ‘প্রয়োজনের তাগিদেই গণজাগরণ হয়, আজকে এখানে তা-ই লক্ষ করা যাচ্ছে। এই গণজাগরণ প্রমাণ করে, উপাচার্যের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন হচ্ছে, তা একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়।’

উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সভাপতি আবদুল মান্নান চৌধুরী উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা আসুন, দেখুন কত মানুষ আমরা এখানে একত্র হয়েছি। এই সমাবেশ প্রমাণ করে, আপনাদের আন্দোলন যৌক্তিক নয়। তাই আসুন মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে আন্দোলন না করে একসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিচালনা করি ও উন্নয়নের পক্ষে থাকি।’