'লাভবান হতে স্বামী, ছেলে ও ভাতিজা হত্যা করেন গৃহবধূকে'

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঋণের দায় থেকে মুক্তি পেতে এবং এক আত্মীয়কে মামলায় জড়িয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হতে স্বামী, ছেলে ও ভাতিজা মিলে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেন গৃহবধূ সুফিয়া আক্তারকে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সঞ্জিত কুমার রায় তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

আলাল উদ্দিনের স্ত্রী সুফিয়া আক্তার (৪৬) গত রোববার নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। পরের দিন এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। গত মঙ্গলবার সুফিয়ার লাশ মির্জাপুরের আজগানা গ্রামের আউলিয়া বিল থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে সুফিয়ার বড় ভাই মেছের আলী বাদী হয়ে ওই দিনই অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মির্জাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ জানায়, পুলিশ মির্জাপুর উপজেলার আজগানা পূর্বপাড়া গ্রামের আলাল উদ্দিন (৫০), তাঁর ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩০) এবং নিহত সুফিয়ার ভাই আবদুল মোতালেবের ছেলে স্বপন মিয়াকে গতকাল বুধবার গ্রেপ্তার করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা সুফিয়াকে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।

টাঙ্গাইলের এসপি বলেন, পুলিশের একটি বিশেষ দল প্রযুক্তির সহায়তায় এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সুফিয়ার স্বামী আলাল উদ্দিন ও ছেলে শরিফুলের জড়িত থাকার প্রমাণ পান। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। তাঁদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নিহত সুফিয়া আক্তারের ভাই আবদুল মোতালেবের ছেলে স্বপন মিয়াকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মাটিকাটা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

এসপি বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পুলিশকে জানিয়েছেন যে নিহত সুফিয়া বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) থেকে কয়েক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে স্বামী আলাল উদ্দিনকে দিয়েছেন। কিন্তু আলালের পক্ষে এ ঋণের টাকা পরিশোধ করা সম্ভব না। এ ছাড়া সুফিয়ার বড় ভাই মিনহাজ উদ্দিনের সঙ্গে আলালের বিরোধ আছে। তাই ছেলে ও শ্যালকের ছেলে স্বপনকে নিয়ে সুফিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তিনি তাঁদের বোঝান যে সুফিয়াকে হত্যা করতে পারলে একদিকে এনজিওর ঋণ থেকে মুক্ত হওয়া যাবে। আবার স্ত্রীর ভাই মিনহাজকে এই মামলায় জড়িয়ে দিতে পারবেন। পরে এই তিনজনকে টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানো হয়।